মিডিয়া খ্যাত সন্ত্রাসী ও রাজাকার


এ যুগে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন না দেখলে ২ বছরের শিশুরও ঘুম হয় না। প্রচারেই প্রসার। বিজ্ঞাপনে দেখে দেখে অভ্যাস হয়ে গেলে আমরা অনেক সময় নিম্নমানের পন্যও কিনে থাকি। এখানেই আছে মিডিয়ার কেরামতি। একটি কথা সারা দিন কানের কাছে বলতে থাকলে একটি জিনিস সারা দিন চোখের সামনে দেখাতে থাকলে আমরা এক সময় সেটাকে সত্য বলে মেনে নেই। যাচাই করার চিন্তা করি না। এমনকি এর বিপক্ষে কেউ কথা বললে তাকে তিরস্কার করি। এই মিডিয়াই আমাদেরকে সন্ত্রাসী ও রাজাকার চিনিয়েছে।
দীর্ঘদিন বিদেশে থাকলেও ব্যাস্ততার কারনে অনেকের বিদেশী সংস্কৃতি দেখার বা স্থানীয় লোকদের সঙ্গে মেশার সুযোগ হয় না। আমার এবং আমার কিছু বাংলাদেশী বন্ধুর সে সুযোগ হয়েছে। একবার একজন বিদেশী (স্থানীয়) বন্ধু কথায় কথায় আমাদেরকে বলল "তোমাদের সঙ্গে মেশার আগে আমার মুসলিম সম্পর্কে অন্য রকম ধারনা ছিল।" সে স্বীকার করল যে, মিডিয়া তাদের এত বেশী প্রভাবিত করেছে যে মুসলিম নাম শুনলেই তাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে মাথায় টুপি, মুখে দাড়ি, হাতে বন্দুক। অবশ্য সবারই তার মতন ধারনা নেই। কিন্তু এমন ধারনার লোকই বেশী।

ছবিতে দেখুন, আমেরিকার মিডিয়া কতৃক প্রচারিত মুসলিম সন্ত্রাসীর কার্টুন। পাশেই রয়েছে এক সন্ত্রাসীর ছবি। এই সন্ত্রাসীর নাম টিমথি ম্যাকভিগ, আমেরিকার নাগরিক। ১৯৯৫ সালে আমেরিকার ওকলাহমাতে একটি বিল্ডিং এর সামনে ট্রাক বিস্ফোরন করে। এতে ১৬৮ জন নিহত এবং ৮০০ জন আহত হয়। ২০০১ সালে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। এটি আমেরিকার ২য় বৃহত্তম সন্ত্রাসী হামলা। ব্যাপারটা মিডিয়াতে এসেছে। কিন্তু আমেরিকা তার স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দ্যেশ্যে মুসলিম সন্ত্রাসীর বিজ্ঞাপন করেছে। যার ফলাফল, মানুষ সন্ত্রাসী বলতেই মুসলিম চেনে।

আমরা ভালো কোন কিছুতে আমেরিকাকে অনুকরন না করলেও এ বিষয়ে আমাদের মিডিয়া ঠিকই আমেরিকাকে অনুসরন করছে। তারা দাড়ি ও টুপি ওয়ালা রাজাকার এর বিজ্ঞাপন করেই চলছে। যার ফলে এখন এমন অবস্থা যে, দাডী ও টুপি ছাড়া যে রাজাকার হতে পারে তা আমরা ভুলতে বসেছি। আশা করা যায়, আগামী প্রজন্ম রাজাকার কথার অর্থ জানবে "দাড়ী, টুপী ওয়ালা লো্ক"।

Comments