গনতন্ত্র ও বাংলাদেশের ২ টি উজ্জ্বল ভবিশ্যত


গনতন্ত্র কাকে বলে, তা বলে আর হাসির পাত্র হতে চাই না। শুধু এটাই মনে করিয়ে দিতে চাই, যে মুখে গনতন্ত্র বললেও আমরা আসলে মনে প্রানে গনতন্ত্র চাই না। আর গনতন্ত্র আমাদের জন্য প্রোযোজ্য নয়। বুঝেছি, এবার হাসির পাত্র না হয়ে গালির পাত্র হয়েছি। আরো একবার আবেগ নয় বিবেক দিয়ে চিন্তা করুন এবং মিলিয়ে দেখুন আমার কথা কতখানি ভুল।
আমাদের দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এরশাদ এর পতনের পর গত ২২ বছর ধরে এই দুই দলই পালাক্রমে ক্ষমতায় আসছে। একবার একদল ক্ষমতায় যায়, তাদের সন্ত্রাস, দুর্নীতি আর অন্যান্য গুনের কারনে মানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলে।

বিপরীত দলটি তখন হয় ফেরেস্তা। মানুষ তাদেরকে ভাল মনে করে যন্ত্রনা লাঘবের জন্য ভোট দেয়, নির্বাচিত করে। ক্ষমতায় এসে এই ফেরেস্তার দল প্রমান করে যে তারা জনগনকে যন্ত্রনা দেওয়ায় আরো বেশী পারদর্শী। তখন অপর দলটি ফেরেস্তা হয়ে যায়, পরবর্তীতে ক্ষমতায় এসে স্বরূপ দেখানোর প্রস্তুতি নেয়। এভাবেই চলে আসছে ২২ টি বছর।

গনতান্ত্রিক দেশে জনগন ক্ষমতার উতস। আমরা যাকে সঠিক মনে করব, তাকেই নির্বাচিত করব। কিন্তু এই দুই দল দ্বারা একাধিকবার নির্যাতিত হয়েও আমরা কেন ঘুরে ফিরে তাদেরকে আবার নির্বাচিত করি? আমরা যোগ্য লোক খোজার চেয়ে বেশী খুজি এই দুই দলকে। কারন একটাই। আমরা এই দুই রহমান পরিবারের বাইরে কিছু চিন্তাই করতে পারি না। ব্যাপারটা কিছুটা রাজতন্ত্রের মতন। রাজবংশের লোকেরাই কেবল রাজা হয়। সঠিক ভাবে বলতে গেলে আমাদের দেশে গনতন্ত্র চলছে না, চলছে বংশীয়তন্ত্র। গনতন্ত্র হচ্ছে বুঝদার ও

ভদ্রলোকের রাজনীতি। এটা আমাদের জন্য নয়।

আমাদের পরিবর্তন দরকার। এই পরিবর্তন হয়ত আসতো ১০ বছর পরে। আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ, তারা পরিবর্তনকে দ্রুততর করে দিয়েছে। তারা ঝানু রাজনীতিবিদ। তারা জানে বিএনপি তাদের জন্য সমস্যা নয়। রাজাকারের দল হলেও জামাতের রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্ত আভ্যন্তরীন গঠন। রাজনীতিতে যেহেতু শেষ কথা বলে কিছু নেই, সুবিধা দেখলে বিএনপি হয়ত ভেঙ্গে যেতে পারে। কিন্তু জামাত, তার রাজাকারি মতাদর্শে অনড়। তাই আওয়ামী লীগ আপ্রান চেষ্টা করছে জামাতকে নির্মুল করার।

এর দুটি ফলাফল হতে পারে।

১। এক নায়কতন্ত্র / একদলীয় তন্ত্র চালু হবে।

২। ইসলামিক শাসন চালু হবে।

যদি বেগতিক অবস্থায় দেশে সামরিক শাসন চালু হয়ে যায় তবে হয়ত এরশাদের মতন আর একজন এক নায়ক (সৈরাচারী) আমরা পেয়ে যাব। সে সৈরাচারী হলেও ইতিহাস নিয়ে মাতামাতি না করে বর্তমান নিয়ে মাতামাতি করবে। আওয়ামী লীগ যদি জামাতকে নির্মুল করতে পারে তবে বিএনপি ও ভেঙ্গে যাবে। একদলীয় শাসন চালু হবে। তখনো ইতিহাস নিয়ে আর মাতামাতি হবে না, কারন মাতামাতি করবে কার সাথে? মাতামাতি হবে বর্তমান নিয়ে। আমরা সামনে আগাবো পেছনে নয়। আর আওয়ামী লীগ যদি জামাতকে নির্মুল করতে না পারে, তবে একদিন দেশে ইসলামিক শাসন চালু হবে। কারন জামাত আর ৫ বছর টিকে থাকলে কোন দলই তাদের সাথে পেরে উঠবে না। এখনই তার নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি।

ফলাফল যাই হোক না কেন, সেটা এখনকার গনতন্ত্রের ছদ্যবেশে বংশীয়তন্ত্রের চেয়ে ভাল হবে। বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিশ্যত দ্রুততর করার জন্য আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ। দেখা যাক, রক্ত কতদুর পর্যন্ত গড়ায়।

Comments