মহাবিশ্ব বা মহাশুন্য কথাটির ইংরেজীটি (Space) আরো বেশী যুক্তিগ্রাহ্য। স্পেস হল ফাকা যায়গা। একেবারে মহাফাকা যায়গা, মহাবিশ্ব। আমরা সবাই জানি যে এটা অনেক বড়। কিন্তু আসলে যে কত বড় সেটা আমাদের সাধারন জ্ঞানে আমরা বুঝতে পারিনা। বিষয়টা কিছুটা ওই কুয়ার ব্যাঙ্ এর মতন যে কখনো কুয়ার বাইরেই যায়নি। কাজেই সমুদ্র যে কুয়ার চেয়ে কত বড় সেই ধারনাটা তার নেই। আমাদের এই সীমিত জ্ঞানেই মহাশুন্যের বিশালতার ব্যাপারে একটা ধারনা পাবার চেস্টা করব।
সৌরজগতে আমাদের পৃথিবীর অবস্থান |
আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়েতে আমাদের সৌরজগতের অবস্থান |
আগেই বলেছি, কোন কিছুর বিশালতা আমাদের সীমিত জ্ঞানে বোঝাটা কস্টকর। উপরের প্যারাতেই দেখুন। আমি যখন ৯৫ লক্ষ কোটি কিলোমিটারের কথা বলেছি তখন আপনি বুঝেছেন যে এটা অনেক অনেক বড় দুরত্ব। কিন্তু এটা যে কত বড় সেটা আরো ভালোভাবে আন্দাজ করতে পেরেছেন যখন বলেছি যে প্লেনে চড়ে ওটুকু দুরত্ব যেতে ১০ লক্ষ বছরের বেশী লাগবে। এজন্য, মহাশুন্যের বিশালতা বোঝার জন্য আমরা যদি একটি মডেল বানাই তাহলে বিষয়টা আরো ভালো বুঝব। যেমন, খেলনা অনেক গাড়ী আছে যেগুলো দেখতে হুবহু সত্যি গাড়ীর মতন। শুধু আকারে ছোট। এর দরজা খোলা যায়, ভেতরে সীট আছে, চাকা, লাইট, কাচ কি নেই ওতে। কিন্তু সবকিছুই আকারে ছোট। এর সবকিছুই কিন্তু আকারে সামঞ্জস্যপুর্ন । গাড়ি যেমন ছোট এর চাকা বা সীটও তেমন ছোট। ঠিক এভাবে আমরা যদি মহাশুন্যের ছোট একটি সামঞ্জস্যপুর্ন মডেল বানাই তবে মহাশুন্যের আকার সম্পর্কে আরেকটু স্বচ্ছ ধারনা হবে।
মহাকাশে গ্যালাক্সি যেভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে |
সুপারনোভা - তারকা বিস্ফোরন |
উপরের কথাগুলো বুঝতে কঠিন হলে সহজ আরেকটি পদ্ধতি আছে। আপনারা সবাই পরমানু চেনেন। পরমানু এত ছোট যে একটি সুইয়ের আগাতে ২০০টি সাজিয়ে রাখা যায়। আমাদের সৌরজগতের তুলনায় একটি পরমানুর যত ছোট। আমাদের গ্যালাক্সির তুলনায় পৃথিবী ঠিক তত ছোট। এমনই সীমাহীন সংখক গ্যালাক্সি নিয়েই আমাদের মহাশুন্য। আমাদের সবচেয়ে কছের তারাটি সাড়ে চার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। যদিও সম্ভব নয় তবুও বোঝানোর জন্য বলছি। ওই তারার কোন গ্রহে যদি মানুষ বসতি স্থাপন করতে পারে তবে পৃথিবীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হবে এরকম- টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা অনুস্টানটি সাড়ে চার বছর পরে দেখা যাবে। মোবাইলে কারোর সঙ্গে কথা বললে “হ্যালো, কেমন আছো” বলার সাড়ে চার বছর পরে সে সেটি শুনতে পাবে। সে আবার “আমি ভালো আছি” উত্তর দিলে আপনি সেটি আরো সাড়ে চার বছর পরে শুনতে পারবেন। অর্থাৎ হ্যালো বলতেই নয় বছর পার হয়ে যাবে। এই হল, সবচেয়ে কাছের তারার অবস্থা। দুরের তারার কথা চিন্তা করতে, ভয় লাগে।
দুই লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে সুপারনোভা। যে এলাকা জুড়ে বিস্ফোরন হয়েছে তার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দুরত্ব ৩০ আলোকবর্ষ |
মহাশুন্য দেখতে যেমন |
সুবানআল্লাহ! অসিম মহাশুন্যেকে খুব সহজ-সরল করে বুঝালেন। জাযাকাল্লাহ খায়ের।
ReplyDeleteমজা লাগল, আল্লাহর কি নিয়ামত।
ReplyDeleteJazajallah
ReplyDeleteধন্যবাদ ' অনেক সুন্দর করে বুঝিয়েছেন ৷
ReplyDeleteমাঝে মাঝে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয় ৷