সমকামীতা - কেন উন্নত বিশ্ব এটাকে সমর্থন করে


ফ্রান্সে সমকামী বিয়ে বৈধ হওয়াকে কেন্দ্র করে সেখানে অনেক অন্দোলন হয়েছে। শুধু সেখানে নয় সারা বিশ্বে এর পক্ষে ও বিপক্ষে আলোচনা ও পর্যালোচনা হচ্ছে। এর পক্ষে রয়েছে রড় বড় জ্ঞানীরা ও বিখ্যাতরা আর বিপক্ষে রয়েছে মুর্খ ও অখ্যাত জনতা আর ধার্মীকেরা। সমকামীতা ভালো না খারাপ সেটা আলোচনা করে কোন লাভ নেই। ভালো ও খারাপ বিষয়টি সম্পুর্ন আপেক্ষিক। আপনার জন্য হয়ত খাসীর বিরিয়ানী ভালো খাবার কিন্তু নিরামিষ ভোজীর কাছে সেটা বিষের মতন লাগে। আমি এই লেখাতে আলোচনা করব, উন্নত বিশ্ব, এত বড় জ্ঞানী, এত বিখ্যাত ব্যাক্তিরা কেন সমকামীতার পক্ষে রয়েছে।
সমকামীতা বলতে আমরা সাধারন অর্থে বুঝি পুরুষ-পুরুষ বা নারী-নারী যৌন সম্পর্ক। একটু গভীরে দেখতে হলে এর অনেক রকমের প্রকারভেদ পাওয়া যায়। একটা কথা বলে রাখা ভালো, সমকামীতা কিন্তু যৌন সম্পর্কের উপর নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে যৌন আকর্ষনের উপরে। একটি ছেলে কোনদিন যৌন সম্পর্ক করেনি কিন্তু করলে সে একটি মেয়েকেই বেছে নিবে। সে মেয়েদের প্রতি তিব্র আকর্ষন বোধ করে বা প্রেমে পড়ে। ছেলেটি যদি ঠিক তেমন আকর্ষন একটি ছেলের প্রতি অনুভব করে বা ছেলে হয়ে ছেলের প্রেমে পড়ে তখন সে সমকামী। যৌন সম্পর্ক হোক বা না হোক। সমকামীতা একটা পছন্দ, কার্জ নয়।

স্বাভাবিক যৌন আকর্ষন সম্পন্ন ব্যাক্তিকে "স্ট্রেইট" বলা হয়। সমকামীতা বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। এটি বেশ জটিল। অনেকে হয়ত ধৈর্য হারিয়ে ফেলবেন।

১। গেঃ একজন পুরুষ, নিজেকে পুরুষ মনে করে, পুরুষের পোষাক পড়ে এবং একজন পুরুষের প্রতি আকর্ষন বোধ করে। এই ধরনের দুইজন পুরুষ বিয়ে করলে এদের মধ্যে স্বামীকে "টপ" এবং স্ত্রী কে "বটম" বলে।

২ লেসবিয়ানঃ একজন মেয়ে, নিজেকে মেয়ে মনে করে, মেয়েদের পোষাক পড়ে এবং একজন মেয়ের প্রতি আকর্ষন বোধ করে। এই ধরনের দুইজন মেয়ে বিয়ে করলে এদের একজন স্বামীর ভুমিকা (পুরুষালী পোষাক ও আচরন) পালন করে।

৩। ট্র্যানিঃ একজন পুরুষ, সে নিজেকে মেয়ে মনে করে। অথবা একজন মেয়ে, সে নিজেকে পুরুষ মনে করে। সে মনে করে, সে ভুল দেহে জন্মেছে। এরা বিপরীত লিঙ্গের পোষাক পড়ে। অনেকে হরমন প্রয়োগ ও অস্ত্রপচার করে দেহের পরিবর্তন করে বিপরিত লিঙ্গের হওয়ার চেস্টা করে। মুল কথা, এদের দেহ এক লিঙ্গের কিন্তু মন আরেক লিঙ্গের। যে কোন লিঙ্গের প্রতি এদের আকর্ষন থাকতে পারে। বেশীর ভাগ হিজরা এই "ট্রানি" ক্যাটাগরীতে পড়ে।

৪। বাইঃ একটি ছেলে বা একটি মেয়ে, সে অপর কোন ছেলে বা মেয়ে উভয়ের প্রতি আকর্ষন বোধ করে। উদাহরন সরুপ, একটি ছেলে যে মেয়েদের প্রেমেও পড়ে আবার ছেলেদের প্রেমেও পড়ে।

উপরের প্রতিটি পদ্ধতিই অস্বাভাবিক। প্রাচীন কাল থেকে সমকামীতা চলে আসলেও এই শ্রেনী বিভাগ কিন্তু পরিপুর্নভাবে বের হয়েছে ৭০ এর দশকে। একটু লক্ষ্য করলেই বুঝবেন এই শ্রেনীবিভাগ করে হয়েছে একজন নিজেকে কি মনে করে ও কি পছন্দ করে তার উপর ভিত্তি করে।

সমকামী হয় দুই শ্রেনীর মানুষ। এক, তারা মানষিক রোগগ্রস্থ। দুই, এটি তাদের বদভ্যাস। মানুষিক রোগ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। শাহরুখ খানের "মাই নেম ইজ খান" ছবিটি যারা দেখেছেন, তারা যানেন, শাহরুখ খান ওই ছবিতে একজন মানষিক রোগীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মানুষের চোখের দিকে তাকাতে তার ভয় লাগে। এমন অদ্ভুত বহু রোগ দুনিয়াতে রয়েছে। কারো এমন রোগ আছে যে সে রাস্তা পার হতে ভায় পায়, কেউ খাবার মাখন দেখলে ভয় পায়। কেউ আবার সারাদিন কাগজ ছিড়তে পছন্দ করে, কেউ প্লাস্টিক পোড়াতে পছন্দ করে। চিকিতসা বিজ্ঞানে এই সব রোগের নাম রয়েছে, এর চিকিতসা রয়েছে। নিজেকে বীপরিত লিঙ্গের মনে করা বা সম লিঙ্গের প্রতি আকর্ষন বোধ করা ঠিক এমনই এক মানষিক রোগ। তবে এমন রোগীর সংখা খুব বেশী নয়। বেশীর ভাগ সমকামী আসলে এটি শুরু করে বদভ্যাস হিসাবে।

সমকামীতাকে বদভ্যাস হিসাবে যারা শুরু করে তাদের বেশির ভাগই অত্যান্ত ধনী। স্বাভাবিক উপায়ে যৌনতা এদের এত বেশী হাতের নাগালে যে এক পর্যায়ে এটি তাদের কাছে এক ঘেয়ে হয়ে যায়। সারা দেশের মানুষ কক্সবাজারে সমুদ্র দেখতে যায়। অনেকে যায় হানিমুনে। কিন্তু কক্সবাজারে থাকে এমন একজন হয়ত কুস্টিয়াতে এক বড় দিঘী দেখে সমুদ্র দেখার চেয়ে বেশী খুশি হবে। কারন সমুদ্র সারাদিন দেখে তার কাছে এক ঘেয়ে হয়ে গেছে।

সারা বিশ্বের জ্ঞানী ও বিখ্যাতরা এই ধনী ব্যাক্তিদের কার্যকলাপকে বদভ্যাস বলতে পারছে না, আবার তাদেরকে মানষিক রোগীও বলতে পারছে না। এছাড়া সমকামীরা বিশ্বজুড়ে একটা বড় ব্যাবসার মাধ্যম। তাই জ্ঞানীরা তাদের জ্ঞানের পরিচিয় দেয় এই বদভ্যাসকারী বা মানষিক রোগীদের সমর্থন দিয়ে।

বিশ্বের অন্যতম বড় সমকামী দেশ অস্ট্রেলিয়া। এখানে সমকামীদের অধিকার রক্ষায় কড়া আইন রয়েছে। তাদেরকে কেউ কটুক্তি করলে হাতে হাতকড়া পড়বে। ইউরোপ-আমেরিকাতে সমকামীতা থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার মতন এতটা অধিকার তারা পায়না। সারা দুনিয়া থেকে, অনেক সমকামী প্রতি বছর স্থায়ী ভাবে বসবাস করার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় আসে। নাগরিকত্ত পাওয়ার জন্যও সমকামীরা বিশেষ অগ্রাধিকার পায়। প্রতি বছরে মার্চ মাসে অলিম্পিকের উদ্ভোদনী অনুস্টানের মতন ব্যায়বহুল অনুস্টানে সমকামী অর্ধনগ্ন র‌্যালী হয় রাস্তায়।

ওদিকে সমকামী নয় এমন বহু অস্ট্রেলীয়ানদের সাথে আমি এ বিষয়ে কথা বলেছি। আইনের ভয়ে সমকামীতাকে খারাপ বলার সাহস তারা পায় না। কিন্তু তারা কেউই এটা পছন্দ করে না। মা-বাবা প্রার্থনা করে যেন তার সন্তান সমকামী না হয়। সমকামী হয়ে গেলে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এদেশের আইন তাদের দেয়নি।

যেদেশের জনগন সমকামীতা পছন্দ করে না সেই দেশে সরকার কেন সমকামীতা সাপোর্ট করে? এর কারন ব্যাবসা। ৯০% সমকামী অতীশয় ধনী। অলিম্পিকের অয়োজক দেশ যেভাবে প্রচুর টাকা আয় করে ঠিক তেমনি অস্ট্রেলিয়া প্রতি বছর প্রায় একই পরিমান টাকা সমকামীতা সাপোর্ট করে আয় করে। সমকামী বার ও ক্লাব , সমকামী র‌্যালী , প্রতি বছর কয়েক হাজার ধনী সমকামী তাদের নিজেদের দেশের সমস্ত সম্পদ নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে চলে আসে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার জন্য। সমকামীতা এই দেশের সরকারের বড় এক আয়ের উতস। আমার চোখে দেখা তাই অস্ট্রেলিয়ার কথা বললাম। যে কয়টি দেশে সমকামীতা বৈধ, সব দেশেই ব্যাবসার জন্য সমকামীতা বৈধ করা হয়েছে।

দরিদ্র সমকামী যে নেই তা নয়। তবে বেশীর ভাগ সমকামী প্রচন্ড ধনী হয়। অস্ট্রেলিয়াতে দামী গাড়ি বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সমকামীদের কাছেই দেখা যায়। উন্নত বিশ্বে ধনী লোকেরা সমকামী হওয়াতে মিডিয়া, বুদ্ধিজীবি, চিকিতসক, বিখ্যাত ব্যাক্তি এমনকি সরকারও তাদেরকে মানষিক রোগী বা বদভ্যাসী বলতে পারছে না। বরং তাদের এই সমকামীতাকে সমর্থন করলে বিরাট ব্যাবসায়িক লাভ রয়েছে। মানবতা বা সমাজ গোল্লায় যাক। ব্যাবসাই হল আসল। 

Comments