শিশুদের ভিন্নধর্মী ও নিত্য নতুন নাম রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশীরা সবচেয়ে এগিয়ে। আজকাল তো এমন নতুনত্বের ঠেলায় পড়ে অনেক শিশুদের যে সব নাম রাখা হচ্ছে সেটা উচ্চারন করতেই কস্ট হয়। শিশুর এক বছর লাগে “মা” ডাক শিখতে। ওদিকে মায়ের পাচ বছর লাগে নিজের সন্তানের নাম ঠিক মতন উচ্চারন করা শিখতে। অনেক মা তো শিখতেই পারেন না। আজীবন ভুল উচ্চারনেই নিজের সন্তানকে ডাকেন।
সেদিন এমনই এক কঠিন নাম নিয়ে এক ব্যাক্তি হাজির হল মৌলভী সাহেবের কাছে। বলছে, হুজুর আমার শিশু কন্যার জন্য একটু দোয়া করেন। হুজুর দোয়া করার আগে জানতে চাইলেন, মেয়ের নাম কি রেখেছেন? লোকটি খুশি হয়ে বলল “তুকাজ্জিবান”। হুজুর অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, এই নাম কেন? লোকটির উত্তর, কোরআনে এই শব্দটা অনেকবার আছে। আল্লাহ নিশ্চই “তুকাজ্জিবান” জিনিসটা পছন্দ করেন। তাই মেয়ের নাম রেখেছি। তাছাড়া নামটি খুব আনকমন হয়েছে। সবাই পছন্দও করেছে। হুজুর লোকটিকে তুকাজ্জিবানের অর্থ বুঝিয়ে দিলেন। এর পরে যে কি হল সেটা আর জানা যায়নি।
তুকাজ্জিবান কথাটা কোরআনে সুরা আর রহমান এর মধ্যে অনেকবার এসেছে। ফাবি আইয়ে আলাহি রাব্বিকা মা তুকাজ্জিবান। অর্থাৎ, তোমরা আল্লাহর কোন কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে। তুকাজ্জিবান অর্থ অস্বীকার করা। আশেপাশে তাকালে কোরআনের এই বাক্যটির তাতপর্য সামান্য হলেও বুঝতে পারি। চারিদিকে আল্লাহর নেয়ামত, রহমত ও কুদরত আমাদেরকে এত বেশী ঘিরে রেখেছে যে এর কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব?
বছর দশেক আগে কোন একটা বিশেষ করনে আমার ছোট ভাইকে টাইপ রাইটারে টাইপ শিখতে হয়েছিল। প্রথমদিন টাইপ রাইটারে টাইপ করে এসে , সে আমাকে বলছে – ভাইয়া, টাইপ রাইটারের কী বোর্ড তো কম্পিউটার এর কী বোর্ডের মতন। বিষয়টা কিন্তু একেবারে উলটো। টাইপরাইটার ব্যাবহার করা লোকদের সুবিধার্থেই, টাইপ রাইটারের অনুকরনে কম্পিউটার এর কী বোর্ড বানাবো হয়েছে। কিন্তু আমার ভাইটি, আগে কম্পিউটার দেখে ফেলেছে বলেই টাইপ রাইটারকে কম্পিউটার কী বোর্ডের অনুকরন মনে হচ্ছে। ওর কাছে মনে হচ্ছে কম্পিউটার স্বাভাবিক বরং টাইপ রাইটার একটি নতুন জিনিস।
আরো আধুনিক, আমার এক বছরের ছেলে, মাঝে মাঝে মোবাইল ফোন নিয়ে খেলা করার জন্য বায়না ধরে। আগে তো তেমন নড়া চড়া করতে পারত না কাজেই টাচ স্ক্রিন, ভালো মোবাইল দিতাম। ইদানিং আবার মোবাইল হাতে নিয়েই আছাড় দেয়। কি আর করব, ওর হাতে একটা কম দামী মোবাইল (বাটন ওয়ালা) ধরিয়ে দেই। সেদিন অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি যে, ও কখনো মোবাইলের বাটন টিপে না। ও টিপ দেয় স্ক্রিন এর উপরে। কারনটা একেবারেই তার ছোট চাচার মতন। আগে টাচ স্ক্রিন দেখে ফেলেছে। কাজেই সে জানে স্ক্রিন এর উপরে টিপতে হয়। বাটন চিনে না।
এবার আসি আমাদের জেনারেশনে। আমি তো ৮৪ সালে প্রথম VCR এ সিনেমা দেখেছি। আমাদের প্রতিবেশীর ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান ছিল। একদিন রাতে তিনি এই নতুন জিনিস VCR এলাকার সবাইকে দেখাতে বাড়িতে নিয়ে আসলেন। VCR আর ২৭ ইঞ্চি রঙ্গীন টিভি। এত বড় টিভিও এর আগে কখনো দেখিনি। বিয়ের আয়োজনের মতন খোলা যায়গাতে, প্রায় একশত লোক সেদিন সিনেমা দেখেছে। চোখের সামনে এখনো সেই দৃশ্য ভাসে। কয়েকদিন পরে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম “একটা VCR এ কয়টা সিনেমা থাকে?”। আমি জানতামই না যে, সিনেমা থাকে ভিডিও ক্যাসেটে, VCR এ নয়। আরো কয়েক বছর পরে, যখন প্রথম টিভির রিমোট কন্ট্রল দেখি তখন তো খুব অবাক হয়েছি। এটা কি করে সম্ভব। রিমোটের সাথে টিভির কোন কোন সংযোগ নেই (তার বিহীন) তার পরেও ওটা টিপ দিয়ে টিভি কন্ট্রল করা যায়। আমাদের আগের জেনারেশন, বাপ-চাচার আমলে তো আরো জটিল। কলের গান (গ্রামোফোন) উঠানের মাঝে রাখা থাকত। ওটা হতে গান ভেসে আসছে আর সারা গ্রামের মানুষ অবাক হয়ে যন্ত্রটির পাশে বসে/দাড়িয়ে রয়েছে। একটি যন্ত্র, কিভাবে গান গায় তা নিয়ে সেই সময়ের শিশু কিশোরদের গবেষনার অন্ত ছিল না। কেউ বলত যন্ত্রটার মধ্যে মানুষের মাথা আছে (কালো যাদু), কেউ বলত ছোট বাচ্চা রাখা যে বড়দের অনুকরনে গান গাইতে পারে। কেউ বলত এটা জীন পরীর কারবার। যন্ত্রের কাছ থেকে সামান্য গান শুনে তখন মানুষ এতখানি অবাক হোত। ওদিকে এখন মোবাইলে ছবি বা ভিডিও তুলে সেটা ফেসবুক বা ইউটিউবের মাধ্যমে জায়গায় বসেই বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এটা দেখে কিন্তু মানুষ মোটেও ততটা অবাক হয় না।
এই লেখা যারা পড়ছেন, তাদের অনেকেই হয়ত যানেন না যে, টিভির তার বিহীন রিমোট কন্ট্রল বাজারে আসার আগে, তার ওয়ালা রিমোট কন্ট্রল ছিল। এখন, এমনই এক তার ওয়ালা রিমোট কন্ট্রল দেখলে আপনি হয়ত অবাক হয়ে বলতে পারেন “একি, রিমোটে আবার তার কেন?” লক্ষ্য করুন, ২০ বছর আগে, তার না থাকাটা আশ্চর্যের ছিল। এখন তার থাকাটাই আশ্চর্যের। মোবাইল ফোনে আগে এন্টিনা ছিল। এখন এই এন্টিনা থাকাটাই অবাক বিষয়। কয়েক বছর পরে সব মোবাইল টাচ স্ক্রিন হয়ে যাবে। তখন মোবাইলের বাটন থাকাটা অবাক বিষয় হবে। এসব দেখে একটা কথা বুঝতে পারা যায়। তা হল, মানুষ কোনটা দেখে কতটা অবাক হবে সেটা নির্ভর করে তার অভ্যাসের উপরে। বস্তুটা কতখানি আশ্চর্যের, সেটা কোন ব্যাপারই নয়। তীর ধনুকের চেয়ে বন্দুক অনেক বেশী আশ্চর্যের। কিন্তু আধুনিক অনেক শিশুই তীর ধনুক দেখে অবাক হবে। কারন খেলনা বন্দুক সে অনেক দেখেছে, খেলনা তীর ধনুক তেমন একটা দেখেনি। টিভির রিমোট আমার কাছে এক সময় অবাক লাগলেও আমার ছেলের কাছে সেটা মোটেও অবাক কিছু নয়। কারন সে জন্ম থেকেই এসব দেখে অভ্যস্ত।
আমদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আলাহর নেয়ামত দেখে আমরা মোটেও অবাক হই না। কারন আমরা জন্ম থেকেই এগুলো দেখে অভ্যস্ত। এগুলো যে সুচিন্তিত ভাবে তৈরি করা সেটা আমরা বুঝিই না।
আমরা সবাই জানি পৃথিবী সুর্যের চারিদিকে ঘোরে। জিনিসটা সহজে বোঝার জন্য এক ফুট লম্বা একটা সুতা নিন। সেই সুতার এক প্রান্তে ছোট একটি ইট বা পাথরের টুকরা বেধে দিন। সুতার আর এক প্রান্ত নিজের হাতে রেখে জোরে জোরে মাথার উপরে ঘুরাতে থাকুন। দেখবেন ইটের টুকরোটি গোল একটি পথে আপনার হাতের চারিদিকে ঘুরছে। এভাবেই সুর্যের চারিদিকে পৃথিবী ঘোরে। এই ঘোরার জন্য দুটি জিনিস কাজ করছে। এক, ইট ও আপনার হাতের মাঝে সুতা দিয়ে বাধা। দুই, ইটকে জোরে চালানো হচ্ছে, ইটের গতি। এই দুটি জিনিসের কোন একটি বন্ধ হলেই এই ঘোরা থেমে যাবে। আপনি ইটের গতি বন্ধ করে দিন, ঘোরা করে ইটটি আপনার হাতে লুটিয়ে পড়বে। আবার এই ঘোরানো অবস্থাতে সুতাট ছেড়ে দিন – ইটিটি দূরে কোথাও ছিটকে পড়বে। পৃথিবীও ঠিক এই দুটি কারনে সুর্যের চারিদিকে ঘুরছে। পৃথিবীর গতি রয়েছে, সেকেন্ডে প্রায় ৩০ কিলোমিটার। আর সুর্য ও পৃথিবীর মাঝে যে সুতো দিয়ে বাধা সেটা হল মহাকর্ষ শক্তি, দুটি বস্তুর মধ্যকার আকর্ষন শক্তি। গতি থেমে গেলে, পৃথিবী সুর্যের গায়ে লুটিয়ে পড়বে। আবার মহাকর্ষ শক্তি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের এই পৃথিবী দূরে ছিটকে পড়ে মহাশুন্যে হারিয়ে যাবে। চিন্তা করে দেখুন, কেমন কায়দা করে পৃথিবীকে সুর্যের চারিদিকে ঘোরানো হচ্ছে। এটা আমাদের কাছে মোটেও অবাক কিছু নয়। আমারা জন্ম থেকে এটা দেখে অভ্যাস্ত।
সুর্যের চারিদিকে ঘোরার সাথে সাথে, পৃথিবী নিজ অক্ষের উপরেও লাটিমের মতন ঘোরে। এমন লাটিমের মতন না ঘুরলে পৃথিবীর একদিক সব সময় সুর্যের দিকে মুখ করা থাকত। আর একদিক সব সময় আড়ালে থাকত। অর্ধেক পৃথিবী সুর্যের তাপে পুড়ে মরুভুমি হয়ে যেত। বাকী অর্ধেক অন্ধকারে বরফে ঢাকা থাকত। কোন প্রানী বেচে থাকার মতন পরিবেশ পৃথিবীতে থাকত না। আবার, পৃথিবী লাটিমের মতন একেবারে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ঘোরে না, একটু কাত হয়ে ঘোরে। এর কারনে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্নভাবে সুর্যের তাপ লাগে। এটাই রিতু ( season ) পরিবর্তন। এমন কাত হয়ে না ঘুরলে, কোন দেশে সারা জীবন শীতকাল, কোন দেশে সারা জীবন গৃস্মকাল হোত।
সারা পৃথিবী ঢেকে রয়েছে বাতাসের সমুদ্রে। মাছ যেমন পানির সমুদ্রে বাস করে। আমরা তেমন বাতাসের সমুদ্রের তলায় বাস করি। পানিতে ডুব দিয়ে যত গভীরে যাবেন পানির চাপ তত বেশী। বাতাসের সমুদ্রের তলায় বাস করি তাই বাতাসের চাপও এখানে বেশী। প্রতি বর্গ ইঞ্চি যায়গার উপরে বাতাসের চাপ প্রায় ১২ কেজি। তার মানে, আপনার শরীরে উপরে বাতাসের চাপ কমপক্ষে দু-এক টন তো হবেই। এত চাপেও আপনার শরীর কুকড়ে যাচ্ছে না তার কারন, আপনার শরীরের ভেতর থেকে একই পারিমান চাপ বাইরের দিকে প্রয়োগ করে বাতাসের চাপ প্রতিহত করে। বাইরের বাতাসের এই চাপ না থাকলে আমাদের শরীর বেলুনের মতন ফেটে যেত। মহাশুন্যে বাতাস নেই। মহাশুন্য যাত্রীরা এজন্য ভারী বিশেষ পোষাক পরে। ওই পোশাকের ভেতরে কৃত্তিম উপায়ে বাতাসের চাপ তৈরি করা হয়। কোন লোক মহাশুন্য থাকা অবস্থায়, ওই পোষাক খুলতে হবে না, খালি একটা ফুটো করতে পারলেই প্রচন্ড চাপে নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে মারা যাবে।
বাচাসের চাপের সাথে আরেকটি জিনিস আছে তা হল বাতাসের ঘনত্ব। মাটিতে বাতাসের ঘনত্ব বেশী, যত উপরে যাবেন ঘনত্ব তত কম। যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বেশীরভাগই ১০ কিলোমিটার উপর দিয়ে চলে। এত উপরে বাতাস থাকলেও তার ঘনত্ব ও খুব কম। উড়োজাহাজের ভেতরে কৃত্তিম উপায়ে বাতাসের চাপ নিয়োন্ত্রন করা থাকে। বাতাসের ঘনত্ব কিন্তু সুর্যের তাপটাকেও ধরে রাখে। মাটিতে যখন তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী তখন দেখা যায় ১০ কিলোমিটার উপরে তাপমাত্রা -৩০ ডিগ্রী। একেবারে জমে বরফ। এ কারনেই মেঘ উপরে জমে থাকে। মেঘও আর এক নেয়ামত। আপনার বাসায় ৬ তলায় বাথরুমের ঝরনা দিয়ে পানি বের করতে গেলে কত কিছু করতে হয়। সাপ্লাইয়ের পানি, পাইপ, মোটর, দেখাশনা করার লোক ইত্যাদি অনেক কিছু লাগে। ওদিকে পাইপ, মোটর কিছু ছাড়াই একটা পুরো শহরের উপরে কয়েক দিন পর্যন্ত পানি ঢালতে পারে এই মেঘ। সমুদ্রের পানি বিন্দু বিন্দু করে বাস্প হয়ে উপরে জমা হয়ে তৈরি করে এই মেঘ। কি আশ্চর্য। কোন পাইপ লাগে না, মোটর লাগে না, ট্যাঙ্কি লাগে না। অথচ উপরে পানি জমা হয়ে ভেসে আছে। ৪০-৫০ তলা বিল্ডিং এর বারান্দা থেকেই হাত দিয়ে মেঘ ধরা যায়। মেঘ আর কুয়াশা একই জিনিস। উপরে থকে দেখলে মাটির কুয়াশাকে মেঘের মতন দেখায়।
মহাকাশ গবেশনা করে বিজ্ঞানীরা অনেক গ্রহ খুজে পেয়েছে। কিন্তু এখনো কোন গ্রহের বাতাস পৃথিবীর মতন প্রানী বাসের উপোযোগী নয়। তাপমাত্রাও উপোযোগী নয়। এই সৌরজগতের কথাই ধরুন। পৃথিবীর আগের ও পরের গ্রহ দুটি হল শুক্র ও মঙ্গল । শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা ৪০০ ডিগ্রী। ওদিকে মঙ্গল গ্রহের তাপমাত্রা -৫৫ ডিগ্রী। আবার পৃথিবীর আকারও কিন্তু আমাদের প্রযোজন অনুয়ায়ী বানানো। পৃথিবীর আকার যদি বড় বা ছোট হত তবে আমাদের শরীরে ওজনও কমবেশী হোত। যেমন পৃথিবীর চেয়ে আকারে সামান্য ছোট মঙ্গল গ্রহে আপনার ওজন কম হবে। আপনি হাটতে পারবেন না, লাফাতে হবে। পা বাড়ালেই দশ ফুট দূরে গিয়ে পড়বেন। ওদিকে পৃথিবীর চেয়ে এক হাজার গুন বড় বৃহস্পতি গ্রহে একজন মানুষের ওজন হবে হাতির চেয়েও বেশী। নিজের শরীরের চাপে নিজেই মারা পড়তে হবে। পৃথিবীর বাতাসও আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বানানো। সবচেয়ে বেশী আছে নাইট্রজেন ৭৮% । অক্সিজেনের পরিমান ২১%। আর প্রানী দেহের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড মাত্র ০।০৪% । নেই বললেই চলে। আমারা জানি, প্রানী নিঃশাসের সাথে অক্সিজেন গ্রহন করে আর কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে। সারা দুনিয়ার কোটি কোটি প্রাণী প্রতি মুহুর্তে নিঃশাসের সাথে ত্যাগ করে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমান তো এতদিনে বাড়িয়ে দেওয়ার কথা। এজন্য ব্যাবস্থা আছে। সেটা হল গাছ। গাছের সংখা প্রানীর চেয়ে বেশী আর তারা ঠিক উলটোটা করে। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহন করে অক্সিজেন ত্যাগ করে। দেখুন, আমাদের জন্য পরিমান মতন অক্সিজেন দিয়েই শেষ নয়। সেটা ধরে রাখার কায়দাও দেওয়া আছে।
জীবদেহ সবসময় ক্ষয় হয়। এই ক্ষয় পুরন করতেই খাবার প্রয়োজন। খাবার হল শক্তির এক রুপ। খাবার সব সময় জীব দেহ থেকে হয়। গবেষনাগারে হয়ত স্বর্ন বা হীরা বানানো যায়, কিন্তু খাবার বানানো যায় না। খাবার অবশ্যই প্রানী/উদ্ভিদ দেহ থেকে আসতে হয়। দুনিয়ার সকল প্রানীই অন্য কোন প্রানী বা উদ্ভিদ হত্যা করে খায়। এই হত্যা করতে হলে তো অবশ্যই প্রানীটি ধরতে(শিকার করতে) হবে। গাছ তো নড়া চড়াই করতে পারে না, শিকার করে খাবে কিভাবে? এজন্য ওদের রয়েছে সালক সংস্লেষন পদ্ধতি Photosynthesis। গাছের পাতা হল খাবার তৈরির ফ্যাক্টরি। শেকড়ের সাহায্যে মাটির ভেতর থেকে পানি নেয়, পাতার সাহায্যে বাতাস থেকে নেয় কার্বন ডাই অক্সাইড, আর নেয় সুর্যের আলো। এসব থাকে গাছ গ্লুকোজ তৈরি করে, সেটা গাছের খাদ্য। এই পদ্ধতিতে অক্সিজেন নির্গত হয়। শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায়। তাই গাছ কিছু গ্লুকোজ শোতকালের জন্য জমিয়ে রাখে।
কোন প্রানী খাবার তৈরি করতে পারে না, একমাত্র গাছ এটা পারে। গাছ নড়তে চড়তে পারে না, তাই তার নিজস্ব খাবার বানানোর পদ্ধতি দেওয়া আছে। একশ বছর আগে তো মানুষ জানতই না যে গাছের প্রান আছে। দাত, মুখ, পাকস্তলী কিছুই নেই অথচ দিব্যি খাবার খেয়ে বেচে আছে।
আমাদের চারপাশে আল্লাহর নেয়ামত সব কিছুর মধ্যেই আছে। এর কোনটাই অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। ( পর্ব ২ - পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
সুবহানাল্লাহ! কি সুন্দর লেখা!
ReplyDelete