বৌ-শাশুড়ী দন্দ্ব এড়ানোর কিছু কৌশল

এই লেখাটার অনুপ্রেরনা পাই ব্লগার “বুড়া মিয়া” এর পারিবারিক অশান্তি বিষয়ক ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা সম্বলিত দুটি লিখা পড়ে।  পারিবারিক (স্বামী-স্ত্রী) অশান্তি  যে কত বড় অশান্তি সেটা ভুক্তোভুগী ছাড়া কেউ বুঝবে না।  অবিবাহিত ভাইয়েরা এটা আন্দাজও করতে পারবে না।  ছোট খাটো কিছু সমস্যা সব দম্পতির মধ্যেই থাকে।  সেটা বড় আকার ধারন করলেই শুরু হয় অশান্তি।  এই ধরনের অশান্তির সম্ভাবনা বেশী থাকে যৌথ পরিবারে।  আর প্রায় সকল ক্ষেত্রেই এই অশান্তির কারন হয় বৌ-শাশুড়ী, ভাবী-ননদ (বিশেষ করে একই শহরে থাকা বিবাহিত ননদ)।  পরিবারের পুরুষ (শশুর, দেবর) সদস্যের সাথে বৌ এর সমস্যা হয় না বললেই চলে।  সবচেয়ে বেশী সমস্যা দেখা যায় বৌ-শাশুড়ী কেন্দ্রিক।   শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বের সব দেশেই বৌ-শাশুড়ী সম্পর্কটা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অসহনশীল।  তাদের সম্পর্ক দা-কুমড়া না হলেও বন্ধুত্বপুর্ন হয় না।  আর বন্ধুত্বপুর্ন হলেও, কোথায় যেন একটা ফাকা থাকে।



বরাবরের মতনই ছোট একটা বিদেশী গল্প বলে নিচ্ছি।  এক ছেলে তার মাকে বলল, মা আমি একটি মেয়েকে পছন্দ করি, তাকে বিয়ে করতে চাই।  ওসব দেশে তো আর আমাদের মতন বাবা-মা কোন ক্ষেত্রেই অমত হয়না বা হতে পারেনা।  মা ছেলেকে বলল, ঠিক আছে কাল মেয়েটিকে বাসায় নিয়ে এস, আমি তাকে দেখব।  একটু মজা করার জন্যই, ছেলেটি পরের দিন ওই মেয়ে ও তার বান্ধবী সহ মোট তিনটি মেয়েকে বাসায় নিয়ে এল।  মাকে জিজ্ঞেস করল, বলতো, কোনটি আমার প্রেমিকা।  একটু দেখে মা উত্তর দিল , মাঝে দাঁড়ানো মেয়েটি।  মায়ের উত্তর সঠিক হয়েছে। সবাই তো খুব অবাক হয়ে গেল, মায়ের বুদ্ধির প্রসংসা করল।  চা-নাস্তার এক ফাকে ছেলেটি আড়ালে এসে মাকে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা মা, ওই মেয়েটিই যে আমার প্রেমিকা সেটা তুমি কি করে বুঝলে?  মা উত্তর দিল, কারন ওই তিনটি মেয়ের মধ্যে ঐ মেয়েটিকে আমার সবচেয়ে বেশী অপছন্দ হয়েছে। 

এই হল বৌ-শাশুড়ী।  দুজনেই দুজনকে আগে থেকেই অপছন্দ করে রাখে।  ছেলে যত বড় হোক না কেন, মায়ের কাছে ছোটই থাকে।  মা ঠিক একইভাবে ছেলেকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখে যেমন রাখত তার শিশুকালে।  হ্যা, আগলে রাখার ধরনটা একটু বদলায়, কিন্তু ছেলের প্রতি মায়ের ভালোবাসা একই থাকে।  সেই মায়ের কাছ থেকে এক দিনের মধ্যেই ছেলে ছিনিয়ে নেয় – ছেলের বৌ।  এটা মায়ের জন্য কস্টকর।  ওদিকে আবার,  একটি মেয়ে তার বাবা-মাকে ছেড়ে স্বামীর বাসায় গিয়ে ওঠে।  এখানে স্বামী তো পায়ই, সেই সাথে পায় স্বামীর পরিবার যেটা প্রথম দিকে তার কাছে বোঝা মনে হয়।   এটাই হল বৌ-শাশুড়ী একে অপরকে অপছন্দ করার সবচেয়ে বড় কারন।  এটা খুবই স্বাভাবিক।  বৌ-শাশুড়ী কেউই কাউকে চেনে না, জানে না।  এমনকি চেনা জানা হলেও নিজেদের এই রূপে একে অপরকে আগে কখনো দেখেনি।  কাজেই সমস্যাটা কিন্তু থেকেই যায়।  ধীরে ধীরে একে অপরকে জানতে ও চিনতে পারলে তখন একে অপরের আপন হয়ে ওঠে।  বৌ-শাশুড়ী যারা আপন হতে পারে না তারা আসলে একে অপরকে চিনে না।   এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুমিকা হল ছেলেটির (স্বামী) ।  বৌ-শাশুড়ী এদের কেউই খারাপ হয় না, খারাপ হয় ছেলে।  বৌ-শাশুড়ীর দন্দ্বে প্রায় সকল ক্ষেত্রেই, হয় ছেলেটি খারাপ নতুবা সে ব্যাপারটি সঠিকভাবে নিয়োন্ত্রন করতে পারে না।

ছেলের আচরনে মা বুঝ ফেলবে, ছেলেটি কি বিয়ে করে পর হয়ে গেল নাকি পরের বাড়ির মেয়েকে নিজের পরিবারের সবার আপন করে নিল।  তেমনিভাবে বৌও স্বামীর আচরনেও ঠিকই বুঝে ফেলবে, সে কি এখনো মায়ের আচল তলে আছে নাকি বঊ এর বাহুবন্ধনে আছে।  এই দুটি জিনিস যে পুরুষ যত ভালো করে ব্যালান্স করতে পারবে তার সংসারে বৌ-শাশুড়ী সম্পর্ক তত ভালো হবে।  

যারা হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করেছেন বা চাকরী জীবনে মেসে থেকেছেন বা থাকছেন তারা বিষয়টি ভালো বুঝবেন।   আমরা হোস্টেলে বা মেসে গিয়ে থাকি কিন্তু স্থানটিকে আপন বানাতে পারি না।   আমাদের আপন হল আমাদের বাসা/বাড়ি।  ওদিকে আমরা যখন বাসা বদল করি তখন কিন্তু নতুন বাসাটিকে খুব অল্প সময়ে আপন করে নেই, কারন এটা হোস্টেল নয়।   ঠিক তেমনি একটি মেয়ের আপন হল তার বাবা-মা এর বাড়ী।  স্বামীর বাড়ীটি তার কাছে প্রথম দিকে হোস্টেলের মতন মনে হয়।  ওখান থেকে ছুটে বাবার বাড়ী যেতে পারলে শান্তি পায়।  এর পরে ধীরে ধীরে সেটা হয় তার নতুন বাড়ী।  তখন সেটা আর হোস্টেলের মতন থাকে না।

স্বামীর বাসাটিকে আপন করে নেওয়াটাই হল আসল কাজ।   বাসাটি আপন করা কথাটির মানে, শুধু ওই ইট পাথর নয়, সেই সাথে মানুষগুলোকেও আপন করা।  এটা করতে পারলে আর কোন সমস্যা থাকে না।  অনেক স্বামীর তার বৌ এর প্রতি অভিযোগ থাকে, তুমি আমার মায়ের ঠিক মতন সেবা কর না, সংসারের অমুক কাজ কর না।  ওদিকে বৌ এর কথা হল, আমি কি দাসী নাকি?   এসবের মুল কারন হল ওই আপন করে নেওয়ার ব্যার্থতা।  হোস্টেলের মতন থাকলে কোনদিন কারো সেবা করা যায় না।  নিজের বাড়ির মতন থাকলে তখন সেবাও করা যায় এবং এটা করলে তখন নিজেকে দাসীও মনে হয় না। 

হ্যা, আপন করে নেবার জন্য বৌ এর ইচ্ছে তো থাকতে হবেই।  সেই সাথে পরিবারের সকলের ভুমিকা প্রয়োজন।   শাশুড়ী যদি মনে করে যে তার বৌ এসেই তার সেবা করবে তাহলে ভুল হবে।  সে তো দাসী নয়।  আগে বৌ এর আপন হও এর পরে সেবা নাও।  শাশুড়ী যদি আপন হতে পারে তবে বৌ অবশ্যই সেবা করবে।   আপন না হয়েই সেবার আবদার করাটা বোকামী।  একজনের কাছ থেকে সেবা নেওয়া, তাও আবার অচেনা কারো কাছ থেকে – এটা এত সোজা নয়।  এর জন্য শাশুড়ীকেও বুদ্ধিমতী হতে হয়।  তাছাড়া এই আপন বানানোর ক্ষেত্রেও সবচেয়ে বেশী ভুমিকা আছে স্বামীটির।  কারন সেই হল মাধ্যম।   বৌ ও পরিবারের মধ্যে সেতুবন্ধন হল সেই পুরুষটি।     

ছোট ছোট ব্যাপারগুলো থেকে শুরু হয়ে অশান্তি কিভাবে ঘটে ও তার প্রতিকার কি, সে বিষয়ে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে কিছু পরামর্শ দিচ্ছি।   এই ব্যাপারগুলো আসলে বিয়ের ১-২ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশী কার্যকর।  যত দেরী হবে , কার্যকারীতা তত কমে যাবে।   (লাল ফিতা একটি উদাহরন মাত্র – সকল চরিত্র ও ঘটনা কাল্পনিক)

উদাহরন – মা ছেলেকে আড়ালে ডেকে বলছে “তোর বঊ কেমন রে? সেদিন দেখলাম, তুই যখন অফিসে ছিলি, বউমা লাল ফিতা দিয়ে গ্রামের মেয়েদের মতন চুল বেধে রেখেছে।  আচ্ছা, ওর মতন শিক্ষিত মেয়ের কি এটা মানায়? কি জানি বাপু কোন গ্রাম্য পরিবার থেকে আসেছে কে জানে। “
লক্ষ্য করুন, এটা কিন্তু একেবারে অপ্রয়োজনীয় একটা বিষয়।  এই কথা শুনে বেশীর ভাগ ছেলেই নীচের দুটির কাজের একটি করবে
১।  হয়ত বলবেঃ মা, তুমি যে কি বল।  লাল ফিতা দিয়ে চুল বেধেছে এতে কি এমন অপরাধ হয়েছে।  সব বিষয়ে খালি দোষ ধর।   ব্যাস - -  এভাবে শুরু হয়ে গেল মায়ের সাথে তর্ক।  যে ছেলে বৌয়ের পক্ষ নিয়ে মায়ের সাথে তর্ক করছে সেই ছেলের বঊকে মা কোনদিন ভালো জানবে না।
২।  হয়ত বলবেঃ  হতে পারে ওরা তো এমনিতেই গ্রাম্য।  এর পরে বৌয়ের কাছে গিয়ে বলবে “তুমি গ্রাম্য মেয়েদের মতন লাল ফিতা দিয়ে চুল বেধেছিলে কেন? মা এখন এই কথা বলছে।  ----- ।  ব্যাস, শুরু হয়ে গেল বৌ এর সঙ্গে ঝগড়া।  যে শাশুড়ী বৌয়ের সামান্য ফিতার জন্য এমন কথা শোনায় সেই শাশুড়ীকে কোন বউই পছন্দ করবে না।

অতএব – দু দিকেই বিপদ।

পরামর্শঃ মায়ের কাছ থেকে বৌ এর বদনাম শুনে, মায়ের সামনে মোটেও বেজার হওয়া যাবে না।  বরং হেসে বলবেন, তাই নাকি, আচ্ছা আমি ওকে বলে দিবে।  এর পরে মায়ের সাথে আরো কথা বলতে থাকবেন।  দেখবেন  আরো কয়েকটা বদনাম করছে।  আপনি ধৈর্য সহকারে শুনতে থাকবেন।  ৫-৭ টা বদনাম করার পরে দেখবেন মা নিজেই আবার দু একটা সুনাম করছে।  মা যদি একান্ত সুনাম না করে তবে আপনি বৌএর সুনামযোগ্য কোন কাজের বদনাম করুন।  যেমন ধরুন, বৌ খুব ভালো ঘর গোছাতে পারে।  আপনি মাকে বলুন যে আপনার বৌ একেবারেই ঘর গোছাতে পারে না।  দেখবেন মা তখন বলবে, না কথাটা ঠিক না, বঊ খুব সুন্দরভাবে ঘর গোছায়।  মোট কথা, মা যখন আপনার বৌয়ের কোন বদনাম করবে তখন মায়ের সাথে আরো কথা বলে যে কোন কায়দায় মায়ের মুখ থেকে বউ এর অন্তত একটি সুনাম বের করুন।  তখন না পারলে অন্য সময় চেস্টা করুন।  তিনি আপনার বৌ এর সুনাম অবশ্যই করবেন।

এর পরে বিদায় নিয়ে বউ এর কাছে গিয়ে আহলাদে গদগদ হয়ে বলুন যে “মা তোমার এই সুনাম করেছে।“  বৌকে এটা জানান যে তার মতন এমন সুনামযোগ্য বৌ পেয়ে আপনি ধন্য।  আপনার বৌকে বুঝতে দিন, সে যতবেশী সুনামযোগ্য হবে, আপনি তত খুশি।  এতে একদিকে তার প্রতি আপনার ভালোবাসা বুঝতে পারবে, অন্য দিকে এটাও বুঝবে যে মায়ের কথা আপনার কাছে গুরুত্বপর্ন।  তাছাড়া বৌও কিন্তু মায়ের নামে আপনার কাছে বদনাম করার জন্য কিছু কথা গুছিয়ে রেখেছিল।  মায়ের সুনাম এর গল্প শুনে বউ সেই কথাগুলো বলতে সাহস করবে না।  এর পরেও যদি বলেই ফেলে তখন – তাকে থামিয়ে দিন।  বলুন, দোষ-ত্রুটি সবার ভেতরেই আছে।  মা যেভাবে তোমার দোষের কথা না বলে গুনের কথা বলছে, ঠিক সেইভাবে মায়ের গুনের কথা বল।  বৌ যদি একেবারে কুজাত পরিবার থেকে উঠে না আসে তাহলে এর বেশী আর তাকে কিছু বলতে হবে না।  

এখন লাল ফিতা বন্ধ করবেন কিভাবে।?  আবার লাল ফিতা দেখলে তো মা আবার বদনাম শুরু করবে নতুবা বৌকে সরাসরি বলবে।   এখানেও রয়েছে কৌশল।  কথা প্রসঙ্গে বৌকে বলুন, যে লাল ফিতা আপনি নিজে কত অপছন্দ করেন।  এটাকে আপনি কতটা গ্রাম্য (ক্ষ্যাত) মনে করেন।  ভুলেও তাকে বলবেন না যে তার লাল ফিতা পরার ব্যাপারটা আপনি জানেন অথবা মা আপনাকে বলেছে।  লাল ফিতার প্রতি আপনার এই অপছন্দের জন্য বৌ লাল ফিতা পড়া বন্ধ করে দিবে। 

অন্য এক সময়ে সুযোগ মতন বৌ এর মুখ থেকে মায়র নামে সুনাম বের করুন।  এর পরে  মায়ের কাছে গিয়ে বলুন “মা , তোমার বৌমা তোমার নামে এই সুনাম করেছে”।  এভাবে উভয়ের সুনামের কথা উভয়কেই বলুন।  বলতে থাকুন।  বিয়ের প্রথম, এক মাস সফলভাবে এমন করতে পারলে বৌ-শাশুড়ী দুজনেই দুজনের সুনামই করতে থাকবে।  দুর্নাম মনে আসলেও সেটা মুখে আনবে না। 

মোট কথা
-    শুধু মা নয়, বাড়ীর যে কোন লোক আপনার বৌ এর নামে যাই বলুক না কেন, আপনি সব সময় সুনামটিই বৌকে বলবেন  
-    বৌ যদি বাড়ির কোন লোকের নামে দুর্নাম করে তবে তাকে থামিয়ে দিন।  বলুন যে ওই ব্যাক্তি তো তোমার দুর্নাম না করে সুনামে করে, তুমিও তাই কর।
-    বাড়ির কোন লোকের অপছন্দটা যদি সত্যই যুক্তিযুক্ত হয় তবে সেটাকে  নিজের অপছন্দ বানিয়ে বৌ এর কাছে প্রকাশ করুন
-    বৌ যদি বাড়ির লোকের কোন কাজ অপছন্দ করে তবে সেই লোকটিকে সেই কাজ করতে নিজে থেকে বারন করুন।  ঘুনাক্ষরে বৌ এর কথা বলবেন না।    
-    দুই পক্ষের দুর্নাম শুনে, মাঝে মাঝে কিছু দোষ নিজের ঘাড়ে তুলে নিন।  এই দোষ আপনি করেছেন শুনলে উভয় পক্ষই শিথিল হবে।

এই লাল ফিতা দিয়ে একটা উদাহরন দিলাম।  লক্ষ্য করে দেখবেন সমস্যা কিন্তু আসলে এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে শুরু হয়।  এর পরে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।  এখানে কথা থাকতে পারে যে সব কথা তো বৌ-শাশুড়ী ওই লোকটির মাধ্যমে বলে না।  তারা নিজেরা  একজন অপরকে সামনা সামনি দুর্নাম করলে বা বাজে কথা বললে তখন কি করা যাবে?  আসলে ভদ্র সমাজে, এমন সামনা সামনি বাজে কথা প্রথম দিকে কেউই বলে না।  শাশুড়ী বলে না ছেলের অশান্তির ভয়ে।  আর বৌ বলে না স্বামীর ভয়ে,  কারন মাকে কেউ বাজে কথা বললে তার স্বামীর প্রতিক্রিয়া কি হয় এটা বুঝতে তার কিছুদিন সময় লাগে।  এটা পুরোপুরি বোঝার আগে সে কখনোই শাশুড়ীর সাথে যুদ্ধে যায় না।   অর্থাৎ প্রথম দিকে বৌ-শাশুড়ীর মাঝে আপনিই মাধ্যম।   এই সুযোগ সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে বৌ , আপনার পরিবারের আপন হযে যাবে।
আপনি ছাড়াও আপনার ও আপনার স্ত্রীর পরিবারের লোকদেরও কিছু ভুমিকা থাকতে হবে।, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ভুমিকা আপনার পরিবারের লোকদের।  

-    ছেলের পরিবার থেকে ছেলেকে পর করে বৌকে আপন করার মানসিকতা থাকতে হবে
-    স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ার মধ্যে, যারই দোষ থাকুক না কেন, স্বামীর পরিবার সব সময় বৌ এর পক্ষ নিবে
-    শশুর-শাশুড়ী পুত্রবধুকে এত আপন করে নিবে যে বৌটি যেন ঝগড়া করে বাবার বাড়ি না যেতে হয়, এই নতুন বাবা মার কাছে থেকেই যেন সান্তনা পায় 
-    কোন দন্দ্ব মিমাংশা করতে যদি কখনো বৌ এর বাবা-মা আসতে হয় – তবে তারা যেন সব সময় জামাই এর পক্ষ নেন।  (দোষ যারই থাকুক না কেন)
-    স্বামীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা (ননদ-দেবর) যেন তাদের দলের ভেতরে নতুন বৌকে সামিল করে নেয়  
-    দুই পরিবারের কেউই যেন তাদের মধ্যে কোন রকমের (শিক্ষা/অর্থ/ক্ষমতা/সন্মান) তুলনা না করে।

সবশেষ আবারো ছোট একটি বিদেশী গল্প।  এক শাশুড়ী মারা যাবার পরে প্রার্থনা অনুস্টানে পুত্রবধুকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল “ আপনার শাশুড়ীর সাথে সবচেয়ে সুখকর মুহুর্তের কথা বলুন”।  পুত্রবধুর উত্তরঃ  বিয়ের কয়েক বছর পরে একদিন শাশুড়ী তাকে (পুত্রবধুকে) বলেছিল – “আমার নিজের ছেলেকে মাঝে মাঝে জামাই মনে হয়। “

এমনই আপন হয় বৌ-শাশুড়ী ।  বৌকে নিজের মেয়ে আর নিজের ছেলেকে জামাই মনে হয়।  কিন্তু তার জন্য সবচেয়ে প্রথমে দরকার তেমন সুযোগ্য ছেলে, এরপরে সেই ছেলের তেমনই সুযোগ্য মা এবং সবশেষে সুযোগ্য বউ।   আমাদের সকল পারিবারিক দন্দ্বের মুল কারন হল আমরা নিজেরাই (মা-ছেলে) সুযোগ্য কিনা সেটা জানিনা, জানতেও চাই না।  ওদিকে আমরা সুযোগ্য পরের মেয়ে (বউ) খুজি।            

Comments