আমি ভূগোল পড়াতে চাই না, তাই সহজে বলছি। জীবন্ত-আগ্নেয়গিরি হল সেই ধরনের আগ্নেয়গিরি, যেটা থেকে সর্বক্ষণ অগ্ন্যুত্পাত হয়। হ্যা, ২৪ ঘ্ন্টা গলিত লাভা (আগুন) বের হচ্ছে। এমন জীবন্ত-আগ্নেয়গিরি পুরো ভারত উপমহাদেশে একটিও নেই। আন্দামান দ্বীপে অবশ্য একটি জীবন্ত-আগ্নেয়গিরি রযেছে। এই আন্দামান দ্বীপ ভারতীয় মালিকানায় হলেও, এর অবস্থান অনেক দুরে, প্রায় ইন্দোনেশিয়ার কাছে।
এই তো, ইন্দোনেশিয়ার কথা চলে এলো। ইন্দোনেশিয়া দেশটিতে ১৩০+ টি জীবন্ত-আগ্নেয়গিরি আছে।
এখানেই শেষ নয়। ১৮৮৩ সালে, ইন্দোনেশিয়ার কারাকাতাও নামক জনশূন্য দ্বীপে, এক অগ্ন্যুত্পাত হয়েছিল। এটা ছিল মানব ইতিহাসে সবচেয়ে জোরালো শব্দ। অস্ট্রেলিয়া, এমনকি আফ্রিকা থেকেও সেই শব্দ শোনা গিয়েছিলো। ৬৫ কিলোমিটার দুরে এক মাঝির কানের পর্দা ফেটে গিয়েছিল। সেই আগ্নেয়গিরির ছাই ছড়িয়ে পড়েছিল সারা বিশ্বে । এত জোরালো অগ্ন্যুত্পাত যে, দ্বীপটির এক অংশ ধংশ হযে গেছে, আবার লাভা জমা হয়ে পাশেই ছোট এক দ্বীপ হয়েছে। সেই অগ্ন্যুত্পাত এর কারনে ভূমিকম্প ও সুনামী হয়েছে। সব মিলিয়ে, প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলো।
আরো আছে। প্রায় ৭৫ হাজার বছর আগে, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে এক ভয়াবহ অগ্ন্যুত্পাত হযেছিল। এত আগে, দুনিয়াতে খুব কম মানুষ ছিলো। তাছাড়, মানুষ তখনো লেখা-পড়ার প্রচলন শুরু করেনি। তাই, এত আগের ঘটনার কোন ইতিহাস নেই। বিজ্ঞানীদের ধারনা, সেই অগ্ন্যুত্পাত এর ফলে, সারা পৃথিবী কয়েক বছর ছাইয়ের মেঘে ঢেকে গিয়েছিলো। এর ফলে সূর্যের আলো বাধা পড়ে, সারা পৃথিবী ঠান্ডা হযে গিয়েছিল। সেই শীত চলেছে প্রায় হাজার বছর ধরে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে পৃথিবী প্রায় অর্ধেক প্রাণী মারা গেছে। সে সময় বিশ্বে যে কয়জন মানুষ ছিল, তার বেশিরভাগই সেই দুর্যোগে মারা গিয়েছিল।
সেই ভয়াবহ অগ্ন্যুত্পাত এর একটি চিন্হ এখনো আছে। অগ্ন্যুত্পাত এর ফলে তৈরি হযেছিল - তিবা হ্রদ। এটা ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় হ্রদ।
Comments
Post a Comment