বিজ্ঞান দিয়ে ইশ্বর প্রমান


মানুষের মধ্যে বহুল প্রচারিত একটি ভুল ধারণা হলো - বিজ্ঞান মানুষকে নাস্তিক হতে শেখায়। এমন ধারণার আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান-মনস্ক লোকজন। বিজ্ঞান-মনস্ক দাবী করা যে কোন একজন কে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি কোন সাবজেক্ট লেখাপড়া করেছেন। জানা যাবে, তিনি ইতিহাস, শিল্পকলা, সমাজ, বাংলা, চারুকলা ইত্যাদি পড়েছেন। বিজ্ঞানের ছাত্ররা কখনো বিজ্ঞান-মনস্ক হয় না।

আসুন, বিজ্ঞানের সকল শাখা দিয়ে, ইশ্বর প্রমাণ করি :

পদার্থবিজ্ঞান (physics): একটি পাত্রে কিছু পানি নিয়ে, সেটাকে চুলায় অল্প তাপে গরম করতে থাকুন। গরম হতে হতে, যখন ওই পানিটুকু বরফে পরিনত হবে, তখন চুলা নিভিয়ে দিন।

  • কথাটি পছন্দ হয় নি। পানি গরম করে কখনো কখনো বরফ হয় নাকি !! কেন হবে না? কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, সবকিছুই এমনি এমনি হয়েছে। কখনো গরম হলে বরফ হবে, কখনো নাড়াচাড়া করলে বরফ হবে। সবসময়ই পানিকে ঠান্ডা করে বরফ বানাতে হবে কেন? এমন বাধ্যতামূলক নিয়ম কে বানিয়েছে?

উদ্ভিদ-বিজ্ঞান (botany): আটা বা ময়দা মেখে, কখনো রুটি বানিয়েছেন? আটার সাথে পানি মিশিয়ে যে আঠালো পদার্থ হয়, সেটাকে একটি গ্লাসে রাখুন। এবার, সেটার ভেতরে একটি গাছের বীজ গুঁজে দিন। এরপর, ওটার উপরে একটু নারিকেল তেল ছিটিয়ে, গ্লাসটা অন্ধকারে রাখুন। কয়েকদিন অপেক্ষা করে দেখুন, কবে গাছ জন্মায়।

  • এই কথাটিও পছন্দ হয় নি। আটার ভেতরে বীজ গুঁজে, তার উপরে তেল ছিটিয়ে, অন্ধকারে রাখলে, গাছ হয় নাকি !! কেন হবে না? কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, সবকিছুই এমনি এমনি হয়েছে। কখনো আটার ভেতরে গাছ হবে, কখনো প্লাস্টিকের ভেতরে গাছ হবে। সবসময়ই মাটির ভেতরে গাছ হবে কেন? এমন বাধ্যতামূলক নিয়ম কে বানিয়েছে?

রসায়ন (chemistry): জানালার কাছে, যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস আছে, সেখানে একটি কাচের টুকরো, কাঠের টুকরো, প্লাস্টিকের টুকরো রাখুন। দেখুন, সবগুলো টুকরোতে মরিচা ধরতে কতদিন সময় লাগে।

  • এই কথাটিও পছন্দ হয় নি। কাঠে আর প্লাস্টিকে মরিচা হয় নাকি !! কেন হবে না? কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, সবকিছুই এমনি এমনি হয়েছে। কখনো কাঠে মরিচা হবে, কখনো কাপড় মরিচা হবে। মাঝে মাঝে, আপনার গায়ে মরিচা হবে। সবসময়ই শুধুমাত্র লোহাতে মরিচা হবে কেন? এমন বাধ্যতামূলক নিয়ম কে বানিয়েছে?

ভূগোল (geography): আমাদের এলাকায় নতুন একটি নলকূপ বসিয়েছে। সেই নলকূপ চাপলে, মাটির নিচ থেকে দুধ আসে। এলাকার লোকজন মহাখুশি। কল চাপলেই দুধ আসে। কোন পয়সা লাগে না।

  • এই কথাটিও পছন্দ হয় নি। নলকূপ চাপলে দুধ বের হয় নাকি !! কেন হবে না? কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, সবকিছুই এমনি এমনি হয়েছে। মাটির নীচ থেকে কখনো দুধ আসবে, কখনো মধু আসবে। মাঝে মাঝে নারিকেল তেল আসবে। সবসময়ই মাটির নীচ থেকে পানি আসবে কেন? এমন বাধ্যতামূলক নিয়ম কে বানিয়েছে?

প্রাণীবিজ্ঞান (biology): অনেক বছর আগের কথা। একবার এক মহিলা, বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনে, দৌড়ে বারান্দায় গিয়ে দেখেন, টবের ফুল গাছে একটা বাচ্চা ঝুলছে। তিনি বাচ্চাটি কোলে নিয়ে, নিজের স্বামীকে দেখিয়ে বলেছিলেন - "এটা আমাদের বাচ্চা"। ওই বাচ্চাটি ছিলাম আমি। ওই মহিলা ও তার স্বামীকে আমি মা-বাবা বলে জানি। আমার জন্ম হয়েছিলো একটা ফুল গাছে।

  • গল্পটা কারো বিশ্বাস হলো না, তাই না। বলবেন, মানুষ আবার ফুল গাছে হয় নাকি !! কেন হবে না? কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, সবকিছুই এমনি এমনি হয়েছে। কেউ জন্মাবে ফুল গাছে, কেউ জন্মাবে তাল গাছে। সবাইকে মায়ের পেটে জন্মাতে হবে কেন? এমন বাধ্যতামূলক নিয়ম কে বানিয়েছে?

প্রায় সকল শাখার কথা লিখেছি। বিজ্ঞানের সকল শাখা থেকেই সৃষ্টিকর্তার প্রমাণ মেলে। তবুও, কিছু মানুষ ইচ্ছা করে অস্বীকার করে। আপনি সৃষ্টিকর্তাকে অবিশ্বাস করুন, অস্বীকার করুন, সেটা আপনার ইচ্ছা। তবে, সেটার জন্য বিজ্ঞানের অজুহাত দিবেন না।

দেখুনঃ যুক্তি দিয়ে ইশ্বর প্রমান

Comments