
বিষয়টি বুঝতে গেলে প্রথমে বুঝতে হবে, কোন চরিত্রের লোকেরা জান্নাতে যাবে। যখন আদম-হাওয়াকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিল তখন দুনিয়াটা স্বর্গের মতনই ছিল। কোলাহল, পরিবেশ দুষন, রোগ বালাই, হিংসা, চুরি, ডাকাতি, মারামারী, খুন, ধর্ষন এসব কিছুই ছিল না। ধীরে ধীরে মানুষ দুনিয়াকে আজকের মতন বানিয়ে ফেলেছে। দুনিয়া তো ক্ষনস্থায়ী, জান্নাত অনন্তকালের জন্য।
দুনিয়ার সব
মানুষকে যদি একসাথে জান্নাতে ঢোকানো হয় তাহলে ওখানের পরিবেশ নস্ট করে ফেলতে
বেশীদিন লাগবে না। একজন আরেকজনের জমি দখল করবে, একজন আরেকজনের হুরকে
ধর্ষন করবে, ইত্যাদি। কে কি করবে এটা দেখানোর জন্যই আমাদের দুনিয়ার জীবন।
দুনিয়াতে যাদের আকাম করে অভ্যাস আছে তারা জান্নাতে গেলেও আকামই করবে।
এজন্যই বাছাই করা , সৎ চরিত্রের, আকাম-কুকাম মুক্ত লোকই জান্নাতে প্রবেশ
করবে। যদিও জান্নাতে প্রবেশের প্রথম শর্ত হল ঈমান। আর ঈমানদার লোক অসত
চরিত্রের হয় না। জান্নাতের নারী পুরুষ উভয়েই হবে উত্তম চরিত্রের অধিকার।
জান্নাতে আমাদের সুখের জন্য কি কি নেয়ামত রাখা আছে সেটা আমাদের চিন্তারও বাইরে। দু একটা বর্ননা বা উদাহরন পাওয়া যায়। কিন্তু আসলে ব্যাপারগুলো সবই আমাদের চিন্তার বাইরে। জান্নাতবাসীদের মধ্যে ঈমান ও সতকর্মের বিচারে মর্যাদা ও সুবিধার তারতম্য থাকবে। কেউ বেশী মর্যাদা ও ভোগবিলাস পাবে, কেউ কম। এ নিয়ে উচ্চ মর্যাদার লোকের মনে কোন অহংকার থাকবে না। নীম্ন মর্যাদার লোকের মধ্যে কোন দুঃখ থাকবে না। কারন অহঙ্কারমুক্ত লোকেরাই জান্নাতবাসী। আল্লাহ যে অবস্থাতে রেখেছেন , সেই অবস্থায় খুশি থাকা লোকই জান্নাতবাসী। নিজের অনেক আছে, তার পরেও অন্যের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা করা লোক জান্নাতে খুজে পাওয়া যাবে না। যেখানে অচেনা লোকের সঙ্গেই মানুষ হিংসা করবে না যেখানে আপনজনের মধ্যে কে বেশী পেল আর কে কম পেল, এই হিসাব কেউ করবে না।
কম বেশী হিসাব করার দরকারও নেই। জান্নাতে যে নেয়ামত আছে , তা আমাদের চিন্তার বাইরে। জান্নাতের সবচেয়ে নীম্ন মর্যাদার লোককে, দশটি দুনিয়ার সমান যায়গা দান করা হবে। কয়েক হাজার দাস থকবে সেবা করার জন্য। তার জন্য বরাদ্ধ থাকবে ২ টি হুর। এমন একজন হুর এর গায়ের ওড়নাটি দুনিয়াতে আনা হলে, দুনিয়ার সব সম্পদের বিনিময়েও সেটা কেনা যেত না। সেই সেবাদাসীরই (হুর) যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ওই লোকটির নিজের জামা কত মুল্যবান হবে, ওই লোকটির নিজে কত সম্পদশালী হবে – সেট বোঝা সত্যই আমাদের ধারনার বাইরে। দুনিয়ার সমস্ত রাজা মহারাজার সম্পদ একসাথে মেলালেও সেটা ওই লোকটির সম্পদের কোটি ভাগের একভাগই হবে না। আর এই লোকটি হল, জান্নাতের সবচেয়ে নীম্ন মর্যাদার, সবচেয়ে কম সুবিধা পাওয়া লোক !!
এতক্ষন বললাম, জান্নাতে কোন চরিত্রের লোক থাকবে এবং তারা কত সম্পদশালী ও মর্যাদাপুর্ন হবে। এবার বলছি হুর প্রসঙ্গে। আগেই বলেছি, হুর হল সেবাদাসী। হুর কোন মানুষ নয়। জান্নাতবাসী পুরুষের মনোরঞ্জন করার জন্য, নারীর আকারে তাকে তৈরি করা হয়েছে। শুধু যৌন তৃপ্তি নয়, বিভিন্ন মনোরঞ্জন। যেমন গল্প করা, নাচ-গান করা ইত্যাদি। কিছুটা নর্তকীদের মতন এক সেবাদাসী। মনোরঞ্জন করাটাই তার কাজ। মহারাজার দাসী বা নর্তকীকে, কোন মহরানী হিংসা করে না। জান্নাতে হুরকেও কোন নারী হিংসা করবে না। অমন হুর ৭০ জন কেন, জান্নাতের সব হুর মিলেও একটা জান্নাতের নারীর মর্যাদার সামনে কিছুই না।
এবার দেখা যাক, দুনিয়াতে নারী ও পুরুষের কেমন চাহিদা থাকে। আগেকার দিনে রাজাতন্ত্র চালু ছিল। রাজা ছিল সবচেয়ে শক্তিমান। রাজার কথাই ছিল আইন। কাউকে বিনা কারনে মেরে ফেললেও কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে হত না। এমন রাজাদের ইতিহাস সবাই জানি। তাদের থাকত ডজনখানিক বউ, কয়েকশত রক্ষিতা, বাইজী ইত্যাদি। এর পরেও কোন সুন্দরী মেয়ে দেখলে তাকে তুলে এনে ধর্ষন করত। ইতিহাস ঘেটে দেখুন, অনেক সময় এমন হয়েছে যে কোন রাজ্যের রাজ্য ক্ষমতায় একজন নারী থাকে। রানী থাকে রাজার ভুমিকায়। পুরুষের চেয়ে নারী শাষকেরা যুদ্ধ, অত্যাচার, শোষন ইত্যাদি কোনটাই কম করেনি। কিন্তু এমন কি কোন উদাহরন আছে যে ক্ষমতাশীল রানীর এক ডজন স্বামী ছিল, বা তার হারেমে শ-খানেক পুরুষ যৌনকর্মী ছিল । এমন কি কোন উদাহরন আছে যে ওই রানী পথে একটা জোয়ান ছেলে পেয়ে তাকে জোর করে ধরে নিয়ে গেলেন ধর্ষন করার জন্য। না, এমন উদাহরন নেই। কারন এমন করাটা ঐ রানীর জন্য অপমানজনক। ইচ্ছে থাকলেও
তিনি সেটা করতে পারেন না। একজন জান্নাতী নারীর মর্যাদা হবে দুনিয়ার সকল রানীর উপরে। কোন পর পুরুষের সংস্পর্শে যাওয়াটা তার জন্য চরম অপমানজনক। তাছাড়া, এক পুরুষে মন ভরে না, এমন নারী তো জান্নাতে পাওয়া যাবে না।
সবশেষে, আল্লাহ জান্নাতে আমাদের সকল ইচ্ছা পুরন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যা চাইব, সেটা দিয়েই আল্লাহ আমাদের খুশি করে দিবেন। একজন প্রশ্ন করেছে, আমি তো পান খেতে পছন্দ করি। আমি জান্নাতে পান চাইলে, পাব তো? হ্যা, তিনি পান চাইলে অবশ্যই পাবেন। কিন্তু আসলে তিনি তা কখনোই চাইবেন না। কারন জান্নাতে এত কিছু দেখে ওই ছাই-পাশ খাওয়ার ইচ্ছেই করবে না। নিজের ছেলেবেলার কথাই ভাবুন। এক সময় লাটিম, মার্বেল, ডাঙ্গুলী, ঘুড়ি ওড়ানো ইত্যাদি কেমন প্রিয় কাজ ছিল। আর এখন ওগুলো করতে ইচ্ছেই হয় না। দুনিয়াতে ইচ্ছে হয় এমন অনেক কাজ জান্নাতে ইচ্ছেই করবে না।
জান্নাতে উন্নত চরিত্রের পুরুষ ও নারী থাকবে। এক পুরুষে মন ভরে না এমন নারীর স্থান জান্নাত নয়। জান্নাতের নারীরা এমন মর্যাদা সম্পন্ন হবে যে অন্য পুরুষের সংস্পর্শে আসাটা তার জন্য অপমান জনক। জান্নাতের নারীরা তার স্বামীর সাথে থাকবে। অবিবাহিত হলে তাকে বিয়ে দেওয়া হবে। এর পরেও যদি কোন নারী একাধিক পুরুষ চায় , তাকে অবশ্যই সেটা দেওয়া হবে। কিন্তু, জান্নাতী কোন নারীর, এমন ইচ্ছেই হবে না।
Valo laglo, Thanks
ReplyDeleteপাগল তোরা মানুষ হবি কবে
ReplyDeleteআপনি মনে হয় মানুষ না??? অন্য কিছু হবেন
DeleteNirob Sheikh ভাই !!! এখানে আপনি অমানুষী কই পেলেন ?
ReplyDeleteআপনার মাথা কি আছে ?