করোনা - আশীর্বাদ, প্রচারনা ও সমাধান



মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও সফল প্রচারনা হল - করোনা ভাইরাস। এইডস (মৃত্যুর হার ৮৫%), যক্ষ্মা (মৃত্যুর হার ৪৩%), ক্যন্সার (মৃত্যুর হার ৪০%) ইত্যাদি ছাড়িয়ে এখন সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রোগ হচ্ছে করোনা বাহিত রোগ কভিড১৯ (মৃত্যুর হার ৬%)।  একশত জনে মাত্র ছয়জন মারা যায়। এই রোগ নিয়ে বিশ্বজুড়ে মানুষ্ধার ধারনা - এই রোগের কোন চিকিতসা নেই। মরতে হবেই। এজন্যই একে সফল প্রচারনা বলছি। একশত জনে মাত্র ছয়জন মারা যায়, ওদিকে মানুষ মনে করে, মৃত্যু নিশ্চিত।


এই রোগের চিকিতসা নেই - এটা সত্য। এর আগের সত্যটা হল - রোগটাই নেই, চিকিতসা থাকবে কিভাবে ?  আমি জানি, এটা মানতে আপনার কস্ট হচ্ছে। লাখো লোক মারা যাচ্ছে, রোগ তো অবশ্যই আছে।  ঠিক আছে, এবার তাহলে রোগটির নাম বলুন। রোগটির নাম হল - COVID19 (Corona Virus Disease). বাংলায় - করোনা ভাইরাস রোগ। এই নামটির মধ্যেই আপনার প্রশ্নের উত্তর আছে। আপনার নাম "আব্দুল্লাহ"। আপনার বাবার নাম কি "আব্দুল্লাহর বাবা"? নিশ্চই আপনার বাবার একটি নাম আছে। আপনার নাম "আব্দুল্লাহ" রাখার আগে, আপনার জন্মের অনেক আগে থেকেই আপনার বাবার একটি নাম আছে। আপনার বাবার নাম 'আব্দুল্লাহর বাবা" নয়। ঠিক তেমনি, প্রত্যেক রোগের একটি নাম প্রথমে থাকে, পরে সেই রোগের জন্য দায়ী জীবাণু আবিস্কার হয়। AIDS রোগটিতে অনেকে আক্রান্ত হয়েছে, প্রান হারিয়েছে, পরবরতীতে এই রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস HIV আবিস্কার হয়েছে। বাবার নাম আগে রাখা হয়, এর অনেক পরে আসে ছেলের নাম। রোগের নাম আগে রাখা হয়। এর অনেক পরে আসে ভাইরসের নাম। এই প্রথম ছেলের নামের উপরে ভিত্তি করে বাবার নাম রাখা হল। করোনা ভাইরাস, নামটি আগে রাখা হয়েছে, এবং এর উপরে ভিত্তি করে রোগের নাম দেওয়া হয়েছে। 

এখন, আপনার প্রশ্ন থাকতে পারে, এমন আগে পরে নাম হলে সমস্যা কি? বড় সমস্যা আছে। কোন CV (বায়োডাটা) তে  ছেলের নাম "আব্দুল্লাহ", ওদিকে বাবার নাম "আব্দুল্লাহর বাবা" (বাবার নিজের কোন নাম নেই) এমন দেখলে আপনি সহজেই বুঝে নিবেন, হয় বাবার পরিচয় গোপন করছে, নতুবা এটি তার ছেলে নয়। সমস্যা কোথাও আছে। ওই বায়োডাটা আপনি গ্রহনই করবেন না। করোনার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ওরা ভাইরাস ছড়িয়েছে, সেই সাথে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। রোগ বানানোর ও তার একটি নাম দেবার সময়ই পায়নি। রোগটাই নেই, চিকিতসা থাকবে কিভাবে?  এই রোগটি নেই বলেই, কোন সংবাদে নিশিত করে রোগের নাম বলতে পারে না/ বলে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু, বলে অমুক মারা গেছে, তার শরীরা করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। যদি সত্যি কোন রোগ থাকত, তাহলে স্পস্ট সংবাদ আসত, অমুক লোক অমুক রোগে মারা গেছে।   

এবার শুনুন, করোনাকে আশীর্বাদ বলছি কেন।  গত দুই মাসে দেশে বিদেশে কোথাও এইডস, ক্যান্সার, যক্ষ্মা, স্ট্রোক, হার্ট এটাক অথবা অন্য যে কোন রোগে, কোন মানুষ কি মারা গেছে ? নাহ, কেউ কোন রোগেই মরেনি। বিশ্বজুড়ে এক লক্ষ সত্তর হাজার লোক মারা গেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে । দুনিয়াতে আআর কোন রোগ হয় না। একটি রোগ বাজারে এসে, বিশ্বের সকল রোগকে বন্ধ করে দিয়েছে, এটা আশীর্বাদ ছাড়া আর কি? জানি, এই কথাটাও মানতে পারছেন না। তাহলে দেখি এটা মানতে পারেন কিনা। বিশ্বে সকল রোগই আছে। অন্য যে রোগেই মানুষ মরে, নাম হয় - করোনাতে মরেছে।  এ পর্যন্ত মিডিয়াতে মানুষের মৃত্যু সংবাদ এভাবে পেয়েছেন - করোনা উপসর্গ নিয়ে অমুকের মৃত্যু (আসলে কি রোগে মরেছে সেটা বলেনি)। অমুক শ্বাসকস্টে মারা গেছেন, তার শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে (তার শ্বস কস্টের কারন বলেনি)। সারা বিশ্বে  এক লক্ষ সরত হাজার লোক মারা গেছে। এর মধ্যে মাত্র একটি সংবাদ খুজে বের করুন যেখানে লেখা আছে - অমুকের শরীরে করোনা ভাইরাসের কারনে এই রোগ বা সেই সমস্যাতে মারা গেছে।তার শরীরে আর কোন রোগ ছিল না । এমন নিশ্চিতভাবে করোনা "ভাইরাসের কারনে মৃত্যু" - এমন কোন সংবাদ বিশ্বের কোন মিডিয়াতে খুজে পাবেন না। যা পাবেন তা হল, করোনা সন্দেহ, করোনা পজেটিভ, করোনা উপসর্গ ইত্যাদি। নিশ্চিতভাবে করোনার কারনেই মৃত্যু - এমন একটি সংবাদ খুজে দেখুন।    

সারা বিশ্বে বিভিন্ন কারনে প্রতিদিন এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার লোক মারা যায়। আপনি এই লাইনটি যখন পডছেন তখন বিশ্বের কোথাও ৩ জন মারা গেল।  করোনার কারনে চার মাসে মারা গেছে এক লক্ষ সত্তর হাজার মানুষ। ওদিকে, এই পরিমান মানুষ এমনিতেই প্রতি ২৮ ঘন্টায় মারা যায়।  করোনার কারনে আমরা পুরো পৃথিবী বন্ধ করে ঘরে বন্দী হয়ে আছি। আরো ৩-৪ মাস এমন চলতে থাকলে এক লক্ষ সত্তর হাজার লোক প্রতিদিন না খেয়ে মারা যাবে। আমরা আমাদের সাধের জীবন এই কয়েক মাস বাচিয়ে রেখে এর পরে আর বেচে থাকার জন্য খাবার খুজে পাব না।

করনীয় কি, সেটা এই সঙ্কটে সবচেয়ে ভালো দেখাচ্ছেন স্বৈরাচারী রাজারা। তুর্কমেনিস্থান দেশটিকে চিনেন? এটি রাশিয়ার একটি ভাঙ্গা অংশ, ইউরোপের একটি  স্বল্প উন্নত দেশ। এই দেশের   স্বৈরাচারী রাজা নিয়ম করে দিয়েছেন - করোনা বিষয়ে কোন কথা বলা যাবে না। করোনা নামটি উচ্চারন করলে জেল, জরিমানা হবে। করোনা বিষয়ক সংবাদ, করোনার দাক্তারী পরীক্ষা কিছুই করা যাবে না। সেই দেশে লকডাউন বলে কিছু নেই। একজনও করোনাতে মারা যায়নি। উত্তর কোরিয়ার  স্বৈরাচারী শাশকের ব্যাবস্থাটাও কিছুটা একই রকমের। ওখানেও নেই করোনা আতঙ্ক। 

আমাদের দেশে হয়ত এমন ব্যাবস্থা করা যাবে না। আমাদের জন্য দরকার যোদ্ধা। আমরা পুলিশ ও ডাক্তারকে করোনা যোদ্ধা বলছি। আসলে তারা যোদ্ধা নয়, তারা সেবক। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থানের সেনা বাহিনী ছিল বিশ্বের দশটি সেরা সেনা বাহিনী মধ্যে একটি। আমাদের মুক্তিযদ্ধা দামাল ছেলেরা সামান্য অস্ত্র ও ট্রেনিং নিয়ে, লুঙ্গি কাছা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে নেমে গেছে।  এরা ছিল যোদ্ধা, জীবন বাজি রাখা যোদ্ধা। এই করোনা সংকটে আমাদের দরকার হাজার দামাল ছেলে, দরকার হাজার যোদ্ধা। যারা শুধু একটি কাজই করবে, সেটি হল - করোনাকে পাত্তাই দিবে না। যেখানে সেখানে ইচ্ছে মতন ঘুরবে আর নিজের শরীরে করোনা ভাইরাস ঢুকাবে। তাদের বিশেষ রঙের পোশাক থাকবে।  সাধারন জনগনের কাছে সতর্কতা থাকবে, কেউ এদের কাছে যাবে ন। এই যোদ্ধারা, সবাই আলাদা একটি যায়গায় থাকবে। এক হাজার যোদ্ধা, সবাই করোনাতে আক্রান্ত হবে। এদের মধ্যে বড়জোর ৫০ জন মারা যাবে। বাকি ৯৫০ জন, প্রমান করে দিবে - করোনাতে কিছু হয় না। আবার এক হাজার জন নামবে, ,আবার একই রুটিন। এভাবে ৪-৫ হাজার লোকের ত্যাগ ও ১০০-২০০ লোকের প্রানের ঝুকির বিনিময়ে আমরা পুরো দেশকে মুক্ত করতে পারব। জি, ভাইরাস বড় সমস্যা নয় - বড় সমস্যা হল - আমদেরকে সকল কাজ ফেলে বসে থাকতে হচ্ছে। ৩-৪ মাস পরে লাখ লোক মারা যাবার চেয়ে এখন শত লোক মরে - আমরা সমস্যাটা সমাধান করতে পারি।  

Comments