ভ্যাকসিনঃ ঝুঁকি, স্বস্তি ও আশা

মহামারী শব্দটি করোনার সাথে যায় না। প্রথম থেকেই এটাকে করোনা সঙ্কট বলে আসছি। আপনি নিজের কথাই চিন্তা করুন। ২০২০ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত করোনা নিয়ে আপনি যত ভীত ছিলেন, এখন কিন্তু আপনার সেই ভয় নেই। আল্লাহর রহমতে, আমি একটি দিনের জন্যও করোনা জিনিসটাকে ভয় পাইনি। এজন্য, কাছের মানুষদের কাছ থেকে পাগল উপাধিও পেয়েছি। আমি যে খুব সাহসী, তা নয়। ভয় পাইনা কারন, প্রথম থেকেই দেখতে পাচ্ছি, এটা একটি সাজানো খেলা।   

খেলাটি কি? খেলাটি হল, সারা বিশ্বের মানুষকে এমন একটি পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া, যাতে মানুষ ভ্যাকসিন নিয়ে মারামারি করে, একে অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়ে নামে। এই যুযোগে ওরা বিভিন্ন দেশ দখল করতে পারে। দেশ দখল করতে না পারলেও অন্তত দেশগুলির অর্থনীতি দখল করতে পারে। এতদিন ধরে যে ভাইরাস দেখছেন, সেটা আসলে একটি ফাউন্ডেশন, একটি ভীত্তি। আসল খেলাটি ভ্যাক্সিনের মধ্যে। তাদের উদ্দেশ্য তখন সফল হবে, যখন মানুষ এই করোনা নিয়ে ভয়ের মধ্যে থাকবে। 

এই খেলার কারিগরেরা একটি বড় ভুল করে ফেলেছে। সেটা হল, এই ভয় সবচেয়ে বেশী ছিল গত বছর মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত। সেই সময় ভ্যাকসিন বের করলে, তারা তাদের উদ্দেশ্য অনুযায়ী কাজ করতে পারতো। সেটা না করে, তারা আরো ভয় বাড়ানোর জন্য অপেক্ষা করেছে। সেই অপেক্ষা করতে করতে, অনেক দেরী হয়ে গেছে। এখন মানুষের মনে আর সেই ভয় নেই। আর কত দেরী করা যায়। ভ্যাকসিন ছাড়ার সময় চলে এসেছে। এজন্য, আগের সেই ভয় ফিরিয়ে আনতেই নানা রকমের চেষ্টা চালাচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, আরো শক্তিশালী ভাইরাস ইত্যাদি বিভিন্ন কথা বলে, সেই ভয় আবারও ফিরিয়ে আনতে চাইছে।  

ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে, বাংলাদেশে কি পরিস্থিতি হতে পারে, সেটা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমরা এমনিতেই আসহনশীল জাতি। অন্যকে ধাক্কা মেরে সামনে এগিয়ে যাওয়াটা আমাদের কাছে এক ধরনের যোগ্যতা। মানুষ ভ্যাকসিন নিয়ে মারামারি করবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু চলমান পরিস্থিতি দেখে খুব ভালো লাগছে। এ বলে, ওকে আগে দাও। সে বলে, তাকে আগে দাও। নিজে ভ্যাকসিনের নেবার জন্য, কেউই আগ্রহী নয়। কাড়াকাড়ি তো দুরে কথা, মানুষ নিজে না নিয়ে, অন্যকে দিতে চাইছে, রীতিনতন ঠেলাঠেলি করছে। এর কারন একটাই, মানুষ এই ভ্যাকসিন এর মান কিংবা কার্যক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান। আগে ভ্যাকসিন নিয়ে, কেউই সমস্যায় পড়তে চাইছে না। সবাই অন্যকে দিতে বলছে। করোনা কারিগরদের দুস্ট পরিকল্পনা অন্য দেশে কাজ করবে, তবে বাংলাদেশে নয়। যদি মানুষ ভ্যাকসিনকে নিরাপদ মনে করে, তবুও সমস্যা নেই। আমাদের দুর্নীতির কারনে, কিছু মানুষের কাছে অনেক ভ্যাকসিন পড়ে থাকবে, আর বেশীরভাগ মানুষই ভ্যাকসিন চোখে দেখবে না।     

করোনা কারিগরেরা অনেক বড় প্রজেক্ট নিয়ে নেমেছে। এত সহজে ওরা ছেড়ে দিবে না। এই মার্চ মাসের ভেতরে, তারা বিভিন্ন উপায়ে মানুষের মেন সেই ভয়টি ফিরিয়ে আনতে চাইবে। এতে সফল হলে ভালো। যদি সফল না হয়, তাহলে অনেক বড় বিপদ আসছে। সেটা হল, তারা গোপনে ভ্যাকসিনের ভেতরে কোন ধরনের বিষ মিশিয়ে দিবে, যাতে কয়েকদিনের মধ্যে লক্ষ মানুষ মারা যায়। মোট কথা, এমনিতে ভয় পেলে ভালো। ভয় না পেলে, লক্ষ মানুষকে হত্যা করে ভয় দিবে। 

 এটা বিশ্বের যে কোন দেশে হতে পারে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সকল দেশ নিয়ে আমার একটাই ভয়। সেটা হল - সরকার আইন দিয়ে ভ্যাকসিন বাধ্যতামুলক করে দিবে। সেই পরিস্থিতির কথা একবার চিন্তা করুন - ভ্যাকসিনে বিষ মেশানো আছে, আবার সরকার সেই ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করছে। এটাই আমার সবচেয়ে বড় ভয়। অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশর ভয় একটু কম। কারন আমরা ফাকি দেওয়াতে ওস্তাদ। আমরা জানি, কিভাবে বাধ্যতামুলক কাজ কিভাবে না করে থাকা যায়। আমরা জানি, কিভাবে ভ্যাকসিন না দিয়েও, ভ্যাকসিন এর সার্টিফিকেট নেওয়া যায়। 

রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদকে মনে আছে? টেস্ট না করেই পনেরো হাজার মানুষকে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিয়েছিল। সেই দলীয় ক্যাডারদের মনে আছে? যারা আপনি ভোট কেন্দ্রে যাবার আগেই আপনার ভোট দিয়ে দিয়েছিল। এমন প্রতিভাবান লোকদের দরকার। আল্লাহর রহমতে, এরাই আমাদের রক্ষা করবে। আপনি ভ্যাকসিন না দিয়েই, ভ্যাকসিন এর সার্টিফিকেট পাবেন। আপনি হাসপাতালে পৌছানোর আগেই আপনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে যাবে।    



Comments