যৌবনের মমি

ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়াসি দ্বীপে এক উপজাতি রয়েছে। তাদের সমাজে মরদেহ সতকার করার পদ্ধতি প্রচুর ব্যায়বহুল। এই আয়োজনকে একটি মেলার সাথে তুলনা করা চলে । ১০-১২ টি গরু জবাই করে, সারা গ্রাম খাওয়াতে হয়। উল্লেখ্য, ইন্দোনেশীয়াতে, গরুর সর্বনিম্ন মুল্য বাংলাদেশের ১ লক্ষ। মোটকথা একজন মারা গেলে, তার কবর দিতে ১৫-২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যায়। এটা তাদের ধর্মীয় পদ্ধতি। কাজেই “আমি গরীব”, এই কথা বলে পার পাওয়া যায় না। এজন্য, ওই উপজাতীদের সমাজে এখনো মমি করার ব্যাবস্থা চালু আছে । লাশ, মমি করে রেখে দেয়, যাতে না পচে । এমন লাশ রাখার জন্য, মাচার মতন বিশেষ এক ঘর আছে (ছবি দেখুন)। তারপর ৫-১০ বছর ধরে টাকা যোগাড় করে। এর পরে কবর দেয়। অনেক সময়, কয়েকটি পরিবার মিলে টাকা জমিয়ে একসাথে কয়েকটি মৃতের কবর দেবার আয়োজন করে। এই পদ্ধতিটি শুধুমাত্র ওই উপজাতীর জন্য। পুরো ইন্দোনেশিয়াতে নয়।

আমাদের দেশের বিয়ের ব্যাপারটা কিছুটা এমন হয়ে গেছে । কেউ মারা গেলে, যেমন দেরী না করে কবর দিতে হয়। ঠিক তেমনি, কারো উপযুক্ত বয়স হলেই, দেরী না করে বিয়ে দিতে হয়। টাকার জন্য বা জীবন গোছানোর জন্য অপেক্ষা করাটা হাস্যকর। বিয়ে আসলে বয়সের ব্যাপার। যখন বয়স হবে, তখনই বিয়ে করতে হবে। এতে শরীর, মন , সুখ, ধর্ম সবই ঠিক থাকবে। যারা দ্রুত বিয়ে করে, তারা দ্রুত জীবনকে গুছিয়ে নিতে পারে। আমরা তো সমাজটাকে পরিবর্তন করতে পারব না। কিন্তু নিজের ঘর তো পরিবর্তন করতে পারি। অভিভাবকের যদি শুভ বুদ্ধির উদয় হয় এবং তারা বিষয়টি বুঝে সঠিক বয়সে ছেলে মেয়েদের বিয়ে দেন তবে আমরা একটি গোছানো ও সুখী সমাজ পাব।

অনেকে আবার প্রশ্ন তোলে, ছেলে তো কামাই রোজগার করে না, বিয়ে করলে বউকে কি খাওয়াবে? যে বেকার ছেলেটি দুই লক্ষ টাকার মোটর সাইকেল চালায়, চল্লিশ হাজার টাকার মোবাইল ব্যাবহার করে, আশি হাজার টাকার ল্যাপটপ আছে, সারারাত মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে, মাসে পাচ হাজার টাকার মোবাইল বিল দেয়। সেই বেকার ছেলেটির, প্রতিদিন অন্তত ৫০০-১০০০ টাকা হাত খরচ লাগে। এত কিছু খরচ করতে পারে, আর একটি মেয়েকে চারটা ডাল ভাত খাওয়াতে পারে না? ওই ভবঘুরে বেকার ছেলেটিকে বিয়ে দিন। দেখুন, সে কিভাবে দ্রুত জীবনটাকে গুছিয়ে নিতে পারে।

ছেলে-মেয়েদের যৌবনকে মমি না বানিয়ে, তাদেরকে সঠিক বয়সে বিয়ে দিন।

Comments

Post a Comment