সবার মেধা কি সমান?

মজার ব্যাপার, দুনিয়ার ৮০% মানুষই মেধা জিনিসটা চিনে না। হ্যা, ঠিক পড়েছেন। বেশীরভাগ মানূষই মেধা জিনিসটা সঠিকভাবে চিনে না। পরীক্ষায় প্রথম হলে, তাকে মেধাবী বলে। তমুক জিনিস মুখস্ত করতে পারলে, তাকে মেধাবী বলে। অন্যেকে হারিয়ে প্রতিযোগীতায় সামনে গেলে, তাকে মেধাবী বলে। দুঃখের বিষয় - পরীক্ষায় উচ্চ নম্বরের সাথে, মেধার কোন সম্পর্কই নেই।

তাহলে, মেধা জিনিসটা কি?

মেধাবীর সঠিক সংজ্ঞা হলো - যে ব্যাক্তি, কোন একটি সমস্যার সহজ সমাধান বের করতে পারে।

একই ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি কম্পিউটার দেখুন। একটিতে বাছাই করে ৩০-৪০ টি সফটওয়্যার ইন্সটল করুন। আরেকটিতে মাত্র ২-৩ টি সফটওয়্যার ইন্সটল করুন। একই ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও, দুটি কি একই রকম কাজ করবে? যারা কম্পিউটারে দুর্বল, তাদের জন্য মোবাইল আছে। দুটো একই মডেলের মোবাইল দেখুন। একটিতে বেশী এপস আছে, আরেকটিতে স্বল্প এপস আছে। কোনটি বেশী কাজে লাগে?

বোঝা গেল, একই ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার হলেও, যেটাতে বেশি সফটওয়ার আছে, সেটা বেশী কার্যকর। মানুষের মস্তিষ্ক (brain) ঠিক তেমন। যার মস্তিষ্কে যত সফটওয়ার, সে তত মেধাবী। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা, ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্ক সফটওয়ার ইন্সটল হয়। এভাবেই মানুষ নতুন জিনিস শেখে। মানুষের মস্তিষ্ক সুপার-কম্পিউটার এর চেয়ে লক্ষ গুণ বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন। অর্থাৎ, সবার মস্তিষ্কই প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন। যে তার মস্তিষ্কে যত বেশী সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারে, সে তত মেধাবী হয়। আবারো বলেছি - শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, অনুশীলন, অভিজ্ঞতা, ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্ক সফটওয়ার ইন্সটল হয়।

সকলেই মেধাবী, পার্থক্য শুধু কাজের ক্ষেত্রে। শাহরুখ খান যদি ক্রিকেট খেলতেন আর সচিন টেন্ডুলকর যদি অভিনেতা হতেন, তাহলে কেমন হতো? যে লোকটি যেই বিষয় শিখে, সেই লোকটি সেই ক্ষেত্রে মেধাবী।

আল্লাহ মানুষকে দুনিয়াতে একটি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন। পরীক্ষার হলে, সবাই একই সুযোগ সুবিধা পায়। একই ধরণের চেয়ার, টেবিল, খাতা, সবই একই ধরণের হওয়া চাই। এমন না হলে, সুষ্ঠু পরীক্ষা হয় না। সবার একই সুযোগ সুবিধা না হলে, সেটা ন্যায়বিচার হয় না।

আল্লাহ অবশ্যই ন্যায়বিচার করেন। সকলকে তিনি একই ধরণের ক্ষমতা সম্পন্ন মস্তিষ্ক দিয়েছেন। আপনি শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ইত্যাদির মাধ্যমে শিখুন আর মেধাবী হোন।

Comments