সবার মেধা কি সমান হয়?

কেউ বলে সবার মেধা একই রকম। কেউ বলে জন্ম থেকেই মেধা কম বেশী হয়। কেউ বলে বেশি পড়লে মেধা বাড়ে। এর কোনটা সঠিক, সেটা নিজেই পরীক্ষা করতে পারেন। আল্লাহ আপনাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছেন। আজকে, আপনাকে দিয়েই পরীক্ষা করাবো। আপনি নিজেই গবেষণা করবেন, নিজেই আবিষ্কার করবেন।

প্রথম ধাপ : রাস্তায় বের হয়ে ১০০ জন অচেনা মানুষ দেখুন। তাদের কারো সাথে কথা বলতে হবে না। শুধুমাত্র তাদের চেহারা দেখুন। আপনার যতগুলো চোখ, কান, নাক, মুখ, আছে ওই ১০০ জন মানুষেরও ততগুলো আছে। আপনার শরীরের যেখানে চোখ নাক রয়েছে, ওই ১০০ জন মানুষেরও সেখানেই রয়েছে। কেউই আপনার চেয়ে বেশি পায়নি, কেউ কম পায়নি। সবাই আপনার সমান চোখ, কান, নাক, মুখ, পেয়েছে। কিন্তু, ওদের কেউই হুবহু আপনার মতন দেখতে নয়।

  • আপনি আবিস্কার করলেন : সবাই একই নাক, মুখ, পেলেও ফলাফল (চেহারা) সকলের হুবহু একই হয় না। সবার ব্রেন একই রকম, কিন্তু তার ফলাফল (মেধা) হুবহু একই রকমের হয় না।

দ্বিতীয় ধাপ: আপনার যে মোবাইল ফোন, ঠিক একই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, এমন একজন বন্ধু বা পরিচিত মানুষ খুঁজে বের করুন। এবার দুটি মোবাইল পাশাপাশি রাখুন। আপনারা দুজনেই ভিন্নভাবে ব্যবহার করেন। কেউ বেশি যত্ন নেন, কেউ অবহেলা করেন। কারো মোবাইলের স্ক্রিন চকচকে, কারো স্ক্রিন ফাটা। কেনার সময়, দুটি মোবাইল হুবহু একই রকমের ছিলো। কিন্তু এখন ভিন্ন হয়েছে।

  • আপনি আবিস্কার করলেন: একই জিনিস, ভিন্নভাবে ব্যবহার এর কারণে, বদলে যেতে পারে। জন্মের সময় সবার ব্রেন একই রকম থাকে। আপনি ভিন্নভাবে ব্যবহার করে নিজের ব্রেন বদলে ফেলেছেন।

তৃতীয় ধাপ: আপনাদের দুই বন্ধুর একই স্মার্টফোন। আপনার বন্ধু হয়তো ইউটিউব, ফেসবুক ইত্যাদি এপস ইন্সটল করেছেন। আপনি কোরা ইন্সটল করেছেন, বিভিন্ন গেম ইন্সটল করেছেন। এবার আরেকটু কষ্ট করে, পরিচিত একজন বয়স্ক লোক খুঁজে বের করুন, যিনি একই মডেলের স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। তাকে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি কোন এপস ইন্সটল করেছেন। বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষ এপস জিনিসটা চেনেই না। বয়স্ক মানুষের মোবাইলে আসলে কিছুই থাকে না। কেনার সময় তিনটি মোবাইল একই ছিলো, এখন কার্যক্ষমতা ভিন্ন।

  • আপনি আবিষ্কার করলেন : স্মার্টফোনে ভিন্ন এপস ইন্সটল করে, ভিন্ন কার্যক্ষমতা হয়। মানুষের মস্তিষ্কের এপস ইন্সটল হয় লেখাপড়া ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। জন্মের সময় সবার একই রকমের মস্তিষ্ক থাকে। যে তার মস্তিষ্কে অংক ও ডিজাইন ইন্সটল করেছে, সে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। যে তার মস্তিষ্কে জীববিজ্ঞান ইন্সটল করেছে, সে ডাক্তার হয়েছে। যে তার মস্তিষ্কে ঠকবাজি আর বাটপারি ইন্সটল করেছে, সে রাজনীতিবিদ হয়েছে। যে কিছু ইন্সটল করেনি, সে তেমন কিছু হতে পারেনি।

আপনার গবেষণার ফলাফল:

মস্তিষ্ক আমাদের চেহারার মতন। সবার একই রকমের, কিন্তু হুবহু এক নয়। জন্মের সময় সবার মস্তিষ্ক একই রকমের (খালি) থাকে। লেখাপড়া ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে, যে যেমন শেখে, তার মেধা তেমন হয়।

Comments

Post a Comment