পাঠ্যবই ও মিডিয়ার কেরামতি - পর্ব ১


যে কোন জাতিকে কোন ভুল তথ্য বিস্বাশ করানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মিডিয়া। আর এ বিষয়ে অব্যার্থ উপায় হলো ভুল তথ্যকে পাঠ্য বইয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া। মিডিয়াতে দেওয়া ভুল তথ্য মানুষ হয়ত অবিস্বাশ করবে,ভুলে যাবে। কিন্তু পাঠ্য বইয়ের ভুল তথ্য কোনদিন ভুলবে না, এবং এগূলো ভুল না শুদ্ধ তা জানার কখনো চেষ্টাও করবে না। আর বইয়ের এই তথ্যের উপর অন্ধ বিস্বাশ সবচেয়ে বেশী আমাদের দেশে।
এমন অনেক তথ্য আছে আমাদের বইয়ে যা আমাদেরকে ইচ্ছা করে ভুল শেখায়। কিছু তথ্য এমন স্পর্শকাতর যে, আমি তা নিয়ে লিখলে হয়ত কাঠগড়ায় দাড়াতে হতে পারে। তাই আমি এমন কিছু প্রচলিত ভূল আপনাদের সামনে তুলে ধরব যাতে কারো মনে কোন কষ্ট না লাগে। আর আমাকেও বিপদে পড়তে না হয়।

চাদে গমন - শুধু আমাদের দেশে নয়। সারা দুনিয়ার পাঠ্য বইয়ে এই ভুল ইচ্ছা করে শেখানো হয়েছে। না,আমি অত বড় পন্ডিত নই যে এই বিষয়টি আমি বের করব। গত দশ বছর ধরে আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশে এ বিষয়ে পত্রিকায় অনেক লেখা, বই, ব্লগ, ভিডিও এসব প্রকাশিত হচ্ছে। বিষয়টা হয়ত অনেকেই জানেন। আপনি google এ "moon landing hoax" লিখে সার্চ করুন। লেখা, ছবি, ভিডিও সবই পাবেন। এগুলোতে একটাই মুল বক্তব্য। চাদে মানুষ কখনো যায় নি। আমেরিকা আমাদের ভুল দেখিয়েছে, ভুল বুঝিয়েছে।

আমি জানি বিষয়টা বিস্বাশ করতে কষ্ট হচ্ছে। চাদে যে মানুষ যায় নি তার বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রচুর প্রমান রয়েছে। বিজ্ঞানের সেই বিষদ আলোচনায় না গিয়ে সাধারন মানুষের বোধগম্য কিছু কথা বলব। অনুগ্রহ করে যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করুন।

-কোন কোন দেশ চাদে মানুষ পাঠিয়েছে ?

-কবে প্রথমবার মানুষ চাদে গিয়েছে ?

-শেষবার কবে চাদে গিয়েছে ?

চাদে মানুষ পাঠিয়েছে একমাত্র আমেরিকা। হ্যা, একমাত্র আমেরিকা। প্রথম ১৯৬৯ সালে এবং শেষবার ১৯৭২ সালে। সর্বমোট ছয় বার। এর পরে আর কোনদিন কেউ চাদে যেতে পারেনি। হ্যা, মানুষ শেষবার চাদে যায় ৪০ বছর আগে। এখন তো প্রযুক্তি আরো উন্নত। এখন কেন চাদে যেতে পারে না?

৪০ বছর আগে ইন্টারনেট, মোবাইল কমিউনিকেশন, স্যাটালাইট ইত্যাদি প্রযুক্তি শুধুমাত্র আমেরিকার কাছে ছিল। অন্যান্য দেশের কাছে তা থাকলেও কিছুটা কম উন্নত ছিল। আর তখন এসব প্রযুক্তি ছিল সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে। তাই ৪০ বছর আগে আমেরিকা যা দেখিয়েছে, আমাদের বিস্বাশ করতে হয়েছে। এখন ২০১৩ সালে প্রযুক্তি সবার হাতের নাগালে। এখন তারা চাদে মানুষ পাঠানোর নামে নাটক করলে সবাই ধরে ফেলবে। তাই এখন তারা চাদে যায় না বা যেতে পারে না। এই নাটক তারা করেছে একবার দুবার নয় , ছয় বার। অন্যন্য দেশ গবেষনা করেছে কিন্তু সফল হয়নি।

পরবর্তিতে,মিথ্যাটা যেভাবে প্রচার হয়েছে, সত্যিটা সেভাবে প্রচার হয়নি। এটি হলো মিডিয়ার কেরামতি। সারা দুনিয়াতে পাঠ্য বইয়ে প্রথম চাদে যাওয়া ওই তিন বান্দরের নাম মুখস্থ করানো হয়েছে। যে বিষয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখে আমরা পাশ করেছি, সে বিষয়টা ভুলে যাওয়া খুব কঠিন। আরো কঠিন বিষয়টাকে ভুল বলে মেনে নেওয়া।

বাংলাদেশের জন্ম থেকেই আমাদের মিডিয়া ও পাঠ্য বইয়ে এভাবে, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন ইত্যাদি বিষয়ে ইচ্ছা করে কিছু ভুল তথ্য দেওয়া রয়েছে। সেগুলো দেখতে দেখতে আমরা এখন ভুল গূলোকেই সত্য বানিয়ে ফেলেছি। মুক্তমনা পাঠকের উৎসাহ পেলে সেই বিষয়গুলি নিয়ে অন্য একদিন লিখব।
--- পর্ব ২ এখানে

Comments